Lead Newsআন্তর্জাতিক

আরেক নতুন ভাইরাসের সন্ধান চীনে, আবারো মহামারির আশঙ্কা

নতুন এক ধরণের ফ্লু ভাইরাস শনাক্ত করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। এই ভাইরাসটিরও মহামারি হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন তারা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটির বাহক শূকর হলেও তা মানুষকেও আক্রান্ত করতে পারে। গবেষকদের আশঙ্কা মানুষ থেকে মানুষে সহজে ছড়িয়ে পড়তে ভাইরাসটি আরও অভিযোজিত হয়ে উঠতে পারে আর বিশ্বজুড়ে নতুন মহামারিতে পরিণত হতে পারে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে করোনাভাইরাস। ধারণা করা হয় বাদুড় থেকে ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে সংক্রিমত হয়েছে। ভাইরাসটির প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ছয় মাসের মধ্যে এতে বিশ্বের এক কোটির বেশি আক্রান্ত এবং পাঁচ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মহামারিতে পরিণত হওয়া ভাইরাসটির এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিষেধক কিংবা টিকা আবিষ্কার সম্ভব হয়নি। করোনাভাইরাস মহামারি আরও দীর্ঘদিন চলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা যখন আভাস দিচ্ছেন তখনই চীনে নতুন ভাইরাস শনাক্তের খবর সামনে এলো।

চীনের বিজ্ঞানীরা বলছেন, শূকর বাহিত নতুন ফ্লু ভাইরাসটির মানুষের শরীরে অভিযোজিত হওয়ার সব ধরণের লক্ষণ রয়েছে। আর নতুন ভাইরাস হওয়ায় এটি থেকে মানুষের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকবে বলেও মনে করেন তারা। এখনই ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু না থাকলেও এটি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

সর্বশেষ যে ফ্লু ভাইরাসটি বিশ্বে মহামারির রূপ নেয় সেটি হলো ২০০৯ সালে মেক্সিকো থেকে ছড়িয়ে পড়া সোয়াইন ফ্লু। ভাইরাসটি যে রকম প্রাণঘাতী হবে বলে প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত সেটি ততটা মারাত্মক হতে পারেনি। এর বড় কারণ বহু বয়স্ক মানুষ আগে থেকেই এটি প্রতিরোধ করার সক্ষমতা ধারণ করতে পেরেছিলেন। সম্ভবত এর কারণ ছিল বেশ কয়েক বছর আগে থেকে ছড়িয়ে পড়া অন্য ফ্লু ভাইরাসের সঙ্গে এটির অনেক মিল ছিল। এ/এইচ১এন১পিডি০৯ নামের ওই ভাইরাসটি থেকে বর্তমানে মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহার হয় বার্ষিক ফ্লু ভ্যাকসিন।  

চীনে নতুন যে ফ্লু ভাইরাস পাওয়া গেছে তার সঙ্গে ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লুর মিল রয়েছে। তবে এর সঙ্গে নতুন কিছু পরিবর্তন যুক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত নতুন ভাইরাসটি বড় কোনও হুমকি তৈরি করেনি। কিন্তু ভাইরাসটি নিয়ে গবেষণা করা প্রফেসর কিন-চো চ্যাং এবং তার সহকর্মীরা বলছেন, এর ওপর নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে।

নতুন এই ফ্লু ভাইরাসটিকে গবেষকেরা জি৪ইএএইচ১এন১ নামে অভিহিত করছেন। এটি মানুষের শ্বাসযন্ত্রের মধ্যে বেড়ে উঠতে এবং বিস্তার ঘটাতে পারে। গবেষকেরা প্রমাণ দেখতে পেয়েছেন যে, এই ভাইরাসটি সম্প্রতি সেইসব মানুষকে আক্রান্ত করা শুরু করেছে যারা চীনের শূকর এবং কসাইখানা ইন্ড্রাস্টিতে কাজ করছেন। বর্তমানের ফ্লু ভ্যাকসিন ব্যবহার করে নতুন ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।

যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত প্রফেসর কিন-চো চ্যাং বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে বিক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছি এবং সেটাই সঠিক। কিন্তু আমাদের অবশ্যই নতুন ভাইরাসের সম্ভাব্য বিপদের ওপর থেকে চোখ সরানো চলবে না।’ নতুন এই ভাইরাসটি এখনই সমস্যা তৈরি করছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এটি কোনওভাবেই অবহেলা করা উচিত হবে না।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − one =

Back to top button