উপকূলের ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পান। বাংলাদেশের দিকে অতি প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি। যেভাবে এগুচ্ছে তাতে সন্ধ্যা নাগাদ সাগর দ্বীপের পূর্বপাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বিকেল ৩টার সর্বশেষ বিশ্লেষণে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলের দিকে গত ৩ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার এগিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে আসছে। বর্তমানে এটি উপকূলের ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে।
উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করার সময় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার থাকবে। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সময় ১০ থেকে ১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে দেশের নদ-নদী ও সাগরের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পটুয়াখালীতে প্লাবিত হয়েছে ২৫টি গ্রাম। তবে এখন পর্যন্ত এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আম্পান-
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইতোমধ্যে আঘাত হানতে শুরু করেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। আজ বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে এর প্রভাব পড়তে শুরু করে। সন্ধ্যা নাগাদ পুরোপুরি আঘাত হানবে জানিয়েছে রাজ্যের আলিপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এটি এখন সাগরদ্বীপ থেকে ৩৫ কিলোমিটার ও দিঘা থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আর বাংলাদেশের ক্ষেপুপাড়া থেকে ২২৫ কিলোমিটার দূরে। সকালের দিকে এটি ২২ কিমি বেগে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অভিমুখে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসে। এটির গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ২৯ কিমি।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান ‘সুপার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ থেকে এখন ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়র সাইক্লোনিক স্টর্মে’ পরিণত হয়েছে। এটি এখন ভয়ংকর চেহারা নিয়ে এগিয়ে আসছে। সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী কোনো অঞ্চলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।