ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে ২শ গ্রাম ১শ গ্রাম নয়, পিস হিসাবে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারে প্রতিটি পেঁয়াজের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা। কিন্তু একটি ডিমের দাম সাড়ে সাত টাকা থেকে আট টাকা। ডিম কেনা সম্ভব হলেও অনেকের পক্ষে পেঁয়াজ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। কাজেই পেঁয়াজ ছাড়াই ডিম ভাঁজি, পেঁয়াজ ছাড়াই পেঁয়াজি তৈরি করা হচ্ছে। পেঁয়াজ নিয়ে যশোরের হাট-বাজারে একরকম ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ২৩০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজের দাম ওঠায় পেঁয়াজের দোকান ফাঁকা পড়ে থাকছে। অনেকে পেঁয়াজ কেনা ও খাওয়া বাদ দিয়েছেন। ভিক্ষুকরা টাকা নয়, পেঁয়াজ ভিক্ষা করছেন।
গতকাল শুক্রবার যশোর শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, ঘণ্টায় ঘণ্টায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার বেশি মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির জন্যে কয়েকজন বিক্রেতাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছে। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, অনেক বড় ব্যবসায়ী পেঁয়াজ গুদামজাত করে রেখেছে।
চাঁচড়া গ্রামের মুদি দোকানদার নজরুল ইসলাম বললেন, ১ শ গ্রামের বেশি পেঁয়াজ কেউ কিনছে না। ছোট আকৃতির ৩টি পেঁয়াজে ১ শ হচ্ছে। যার দাম ২৫ টাকা। অনেকে ৮/১০ টাকা দিয়ে একটি পেঁয়াজ কিনছে। রেলগেট তেঁতুলতলা এলাকার ভ্যানচালক আব্দুল উদুদের স্ত্রী রহিমা বেগম বললেন, কোনো ভর্তাতেই পেঁয়াজ দিচ্ছি না।
রেস্টুরেন্টগুলোই পেঁপে দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পেঁয়াজি। অনেকে মশকরা করে পেঁয়াজিকে পেঁপেজি বলছে। রেলগেট এলাকার পেঁয়াজির দোকানদার বাবু মিয়া বললেন, একটি পেঁয়াজির দাম ২ টাকা। এখন আর পেঁয়াজি তৈরি করছি না। আলুর চপ আর বেগুনি তৈরি করছি।
চাঁচড়া বর্মণ পাড়ার মৎস্য ব্যবসায়ী অরুণ বর্মণ বললেন, পেঁয়াজ নিয়ে বাড়ি অশান্তি হচ্ছে। আমরা এখন তেল নুন আর কাঁচা মরিচ দিয়ে ডিম ভাজি করছি। পেঁয়াজ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। ভাতুড়িয়া গ্রামের দিনমজুর জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ঝিমনি বেগম আফসোস করে বললেন, ছোট মাছ জলপাই আর পেঁয়াজ দিয়ে চচ্চড়ি খেতে পারছি না। স্বামী পাঁটি মাছ ধরে আনে। পেঁয়াজ ছাড়াই তা রান্না করি।
যশোর শহরের বাড়ান্দি পাড়া এলাকার শ্রমিক হাসান আলী বললেন, এক কেজি আপেলের দাম ১০০ টাকা। এক কেজি পোল্ট্রি মুরগির দাম ১১০ টাকা। বউকে বলেছি আপেল কুঁচি দিয়ে মুরগি রাঁধতে। পেঁয়াজের দোকানে যাচ্ছি না।