Breakingকরোনাভাইরাস

করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকার জন্য হাহাকার!

করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকার জন্য রীতিমতো হাহাকার শুরু হয়েছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার মজুত প্রায় ফুরিয়ে আসায় রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে।

প্রথম ডোজের নেয়া ব্যক্তিরা দ্বিতীয় ডোজের জন্য কেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছেন। চাহিদার তুলনায় টিকা গ্রহণেচ্ছু মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কেন্দ্রগুলোতে প্রায়ই হইচই হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাজধানীর জাতীয় নাক, কান ও গলা ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদানের টোকেন নেয়াকে কেন্দ্র করে গ্রহণেচ্ছু ও দায়িত্বরতদের মাঝে বাগবিতণ্ডা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভোর থেকেই শত শত টিকা গ্রহণেচ্ছু নারী-পুরুষ কেন্দ্রটিতে উপস্থিত হতে শুরু করেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে মাত্র ৫০০ ডোজ টিকা মজুত থাকায় তারা উপস্থিত ব্যক্তিদের লাইনে যারা শুরুর দিকে ছিলেন তাদের আগে টোকেন দিতে থাকেন। উপস্থিত অনেকেই তখন টোকেন দেয়ায় অনিয়ম হয়েছে বলে হইচই শুরু করেন।

তাদের অভিযোগ, অনেকেই তাদের অনেক দিন পরে প্রথম ডোজের টিকা নিলেও তাদের আগে টোকেন অনুযায়ী টিকা দেয়া হচ্ছে। টোকেন প্রদানের ক্ষেত্রেও স্বজনপ্রীতি ও অর্থের বিনিময়ে সিরিয়াল ভেঙে টিকা দেয়া হচ্ছে।

এদিকে টিকাদানে অনিয়মের অভিযোগ শুনে সেখানে ছুটে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা। সব মিলিয়ে কিছুক্ষণের জন্য টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

পরে নাক, কান ও গলা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা বলেন প্রথমে টোকেনধারীদের টিকা দেয়া হবে এবং ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আরও কিছু টিকা আসবে বলে আশ্বস্ত করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালটিতে গিয়ে টিকাকেন্দ্রের সামনে নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। প্রত্যেকেই টিকাপ্রাপ্তি নিয়ে ছিলেন উদ্বিগ্ন।

মগবাজার থেকে আসা এক বৃদ্ধ দম্পতি জানান, তারা সকাল থেকে টিকা দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। ভিড়ের কারণে টোকেন সংগ্রহ করতে পারেননি। নিরাপত্তারক্ষীরা বার বার লাইনে দাঁড়ানোর জন্য বললেও তারা কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারের সামনে বসে ছিলেন। এক সময় রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা তাদের দীর্ঘসময় বসে থাকতে দেখে ডেকে টিকা দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিকাদান কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, সকালে তাদের কাছে মাত্র ৫০০ ডোজ টিকা থাকলেও মানুষ ছিল প্রায় তিন হাজার। এ কারণে হইচই দেখা দেয়। পরে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও কিছু টিকা এলে সেগুলো দেয়া হচ্ছে। টিকার স্বাভাবিক সরবরাহ থাকলে এমনটা হতো না।

গত ২৭ জানুয়ারি থেকে দেশে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন হয়। এ পর্যন্ত টিকা নিতে মোট নিবন্ধন করেছেন ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জন। সারাদেশে মোট ৫৮ লাখ ২০ হাজার মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়। এরপর টিকা সরবরাহ বন্ধ হলে ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজের টিকাদান কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। ২৫ মে পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন মোট ৪০ লাখ ৮৪ হাজার ৩০ জন।

এদিকে আগাম অর্থ পরিশোধ করেও ভারতীয় কোম্পানি সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা না পাওয়ায় বর্তমানে দ্বিতীয় ডোজের প্রায় ১৪ লাখ মানুষের টিকা গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন উৎস থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। সেগুলো পেলে দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষমাণ ব্যক্তিরা টিকা পাবেন।

তিনি আরও বলেন, প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণের ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পরও দ্বিতীয় ডোজের টিকা গ্রহণ করা যাবে। কোনো সমস্যা হবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × four =

Back to top button