Lead Newsকরোনাভাইরাসস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

করোনার নতুন উপসর্গ ডায়েরিয়া

করোনাভাইরাস আতঙ্কে স্থবির পুরো বিশ্ব। চারদিকে ভয় এবং আতঙ্কের পরিবেশ। মৃত্যু মিছিল যেন কিছুতেই থামতেই চাইছে না। যত দিন যাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ততই বাড়ছে। করোনাভাইরাসে কোণঠাসা সবাই। করোনার করাল থাবা কাউকে ছাড়ছে না। বৃদ্ধ, তরুণ, শিশু কেউ এই ভাইরাসের মারণ থাবা থেকে বাঁচতে পারছে না।

কিছুদিন আগেও মনে করা হচ্ছিল। যে করোনাভাইরাসের কবল থেকে শিশুরা নিরাপদ। কিন্তু কাশ্মীর, যুক্তরাষ্ট্রেও শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে। যথেষ্ট সাবধান না হলে বাচ্চারাও রেহাই পায় না এই ভাইরাসের কবল থেকে।

তবে শিশুদের মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ বয়ষ্কদের মতো নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো সম্পূর্ণ নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সুপ্ত অবস্থায় শিশুরা এই ভাইরাসটি বহন করতে পারে। উপসর্গ না থাকায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

পেডিয়াট্রিক্সের ফ্রন্টিয়ার্স জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড -১৯ এ আক্রান্ত শিশুদের প্রথমে শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নাও থাকতে পারে। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে হজমজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা শিশুদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার নতুন একটি উপসর্গ। এছাড়া কিছু শিশুর ক্ষেত্রে শারীরিক দুর্বলতাও দেখা যেতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে অনেকের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ বোঝা যায় না, বাড়ির অন্যদের কাছে তারা সুস্থ হিসাবেই বিবেচিত হয়। ফলে পরিবারের অন্য সদস্য, বিশেষত বয়স্কদের মধ্যে তারা রোগ সংক্রমিত করতে থাকে।

এই গবেষণায় কভিড-১৯ মহামারির মূল কেন্দ্রস্থল চীনা শহর উহানের দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে পাঁচটি শিশুকে জড়িত করা হয়েছিল। এদের মধ্যে চারটি শিশুর ক্ষেত্রেই প্রথমে হজমের সমস্যার লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। বাচ্চারা কভিড-১৯ এ সংক্রমিত হলেও প্রথমে তাদের মাঝে সাধারণ কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। উহানের শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ২৩ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চিকিৎসা নেওয়া এসব শিশুদের মাঝে করোনার সাধারণ লক্ষণ শ্বাসকষ্ট ও কাশি ছিল না। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে মাত্র একটি শিশুর মাঝে লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছিল। যার আবার করোনা রোগীদের সঙ্গে থাকার রেকর্ড রয়েছে। এছাড়া বাকি চারজন শিশুর মাঝে কোন লক্ষণ ছিল না।

গবেষকরা লিখেছেন, রোগটির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে কভিড-১৯ আক্রান্ত পাঁচটি শিশুর মধ্যে চারটির জ্বর হয়েছে। তবে জ্বর সহনীয় পর্যায়ে ছিল এবং আন্যান্য কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। করোনাভাইরাসের কারণেই তাদের জ্বর হয়েছিল কিনা সেটি পরিষ্কার নয়। সবগুলো শিশুদের বুকের সিটি স্ক্যান রিপোর্টে সাধারণ নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো দেখা গেছে।

উহানের টঙ্গজি হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক ড. ওয়েনবিন লি বলেছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে যখন কোনো শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যার লক্ষণ থাকে তখন তাকে সহজেই চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় এবং সহজেই সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে যাদের মাঝে লক্ষণ দেখা যায় না সেক্ষেত্রেই বিপদটা বেশি। কভিড-১৯ চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা হল, এই অঞ্চলে কিছু কিছু শিশুর ক্ষেত্রে হজমজনিত সমস্যা এবং শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করা শিশুদের মাঝে পরীক্ষায় কভিড-১৯ পজিটিভ দেখা গেছে। সুতরাং, এই দুই লক্ষণ দেখা গেলে করোনায় সংক্রমিত হতে পারে বলে সন্দেহ করা উচিত। সূত্র- নিউজ উইক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =

Back to top button