Lead Newsকরোনাভাইরাসস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে এগিয়ে যারা

জাতিসংঘের গত সোমবারের তথ্য অনুযায়ী, তিনটি প্রতিষ্ঠান নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টায় তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি ভ্যাকসিনগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে।

সিনোভ্যাক

কোভিড-১৯ রোগের নিষ্ক্রিয় অংশের ওপর ভিত্তি করে একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ করছে চীনের কোম্পানি সিনোভ্যাক। প্রথম দফার পরীক্ষাগুলোয় এ ভ্যাকসিন বেশ সাফল্য দেখিয়েছে। এখন ব্রাজিল ও বাংলাদেশে কয়েক হাজার মানুষের ওপর টিকাটির তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি

শিম্পাঞ্জির শরীরে সাধারণ সর্দি-কাশি তৈরি করে, এমন একটি ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন করে অক্সফোর্ড ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রজেনেকার যৌথ উদ্যোগে এ ভ্যাকসিনটি তৈরি করা হচ্ছে। ভ্যাকসিনটি করোনাভাইরাসের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং তখন শরীরের ভেতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বুঝতে পারে যে কীভাবে করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করে পরাস্ত করা যাবে। সম্প্রতি গবেষকরা ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্যাকসিনটির তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু করেছেন। ভারতেও ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে।

ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন/মারডক চিলড্রেনস রিসার্চ ইনস্টিটিউট

প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো একটি ফুসফুসের ভ্যাকসিন নিয়ে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চালাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার মারডক চিলড্রেনস রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এ ভ্যাকসিন যদিও সরাসরি কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা করে না, কিন্তু এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিশ্বে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারে যত উদ্যোগ

জাতিসংঘের সর্বশেষ ২০ জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা বা ভ্যাকসিন বানাতে ১৭৩টি উদ্যোগ চলছে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ১৪০টি ভ্যাকসিনের এখনো মানবদেহে পরীক্ষা শুরু হয়নি। একে বলা হয় ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’। বিজ্ঞানীরা এখনো এসব টিকা নিয়ে গবেষণা করছেন, পশু বা প্রাণীর ওপর প্রয়োগ করে কার্যকারিতা যাচাই করছেন

এ ছাড়া ১৯টি টিকার কার্যক্রম প্রথম পর্যায়ে রয়েছে, অর্থাৎ ক্লিনিক্যাল টেস্টিং বা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ পর্যায়ে মানুষের ছোট একটি গ্রুপের ওপর টিকাটি প্রয়োগ করে দেখা হয় যে এটি নিরাপদ কি না। সেইসঙ্গে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় কতটা প্রভাব ফেলে, তাও যাচাই করা হয়।

১১টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন রয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ে। এ পর্যায়ে এসব টিকা কতটা নিরাপদ, তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এ পর্যায়ে কয়েকশ মানুষের ওপর টিকার পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এর নিরাপত্তা ও সঠিক মাত্রা নিরূপণের চেষ্টা করেন।

এ ছাড়া বিশ্বে এখন তিনটি ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। এ পর্যায়ে কয়েক হাজার মানুষের ওপর টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয় যে সেটি কতটা নিরাপদ, কতটা কার্যকর এবং ভ্যাকসিনটি প্রয়োগে বড় ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হয় কি না। এখানে সফলতা পেলেই সাধারণত ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়ে থাকে। জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক দেশের বাইরে অন্য কোনো দেশে করতে হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + fourteen =

Back to top button