করোনাভাইরাসকূটনীতিজাতীয়

করোনায় আক্রান্ত আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরা ৩১ ভারতীয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে ফেরা সে দেশের ২৫৮ জন নাগরিকের মধ্যে ৩১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সেখানকার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দেশের কথা পত্রিকা সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকেরা গত ১৮ এবং ১৯ জুন আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যান। ভারতে যাওয়ার পর তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষায় ৩১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

এদিকে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরার সময় দায়িত্ব পালনকারী আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারাও বেশ ঝুঁকিতে আছেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের একজন (সহকারী উপ-পরিদর্শক) দেওয়ান মোর্শেদুল হক জানান, আমরা ফ্রন্ট লাইনে থেকে কাজ করেছি। তাদের সংস্পর্শে আসা ছাড়া কোনও উপায় নেই। ভারতের পক্ষ থেকে খবর পেলাম বাংলাদেশ থেকে ফেরা তাদের ২৫৮ জন নাগরিকের মধ্যে ৩১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজগুলো করেছি। তারপরও তাদের আক্রান্তের বিষয়টি জানতে পেরে কিছুটা ভয় কাজ করছে।

তিনি বলেন, আমাদের নমুনা পরীক্ষা করা প্রয়োজন। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত এলে হয়তো আমাদের নমুনা পরীক্ষা হতে পারে।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা জানান, ভারতীয় নাগরিকেরা নিজ দেশে ফেরার সময় আমি সেখানে ছিলাম। আমাদের পক্ষ থেকে ভারত ফেরা নাগরিকদের পরীক্ষা করার কোনও সুযোগ ছিল না। আমরা কেবল ভারত থেকে বাংলাদেশে যারা আসেন তাদের নমুনা সংগ্রহ করে থাকি। আর যেহেতু তাদের ৩১ জন নাগরিক আক্রান্ত হয়েছে ফলে এটা তো আতঙ্কেরই খবর। তারা ভারতে ফেরার পথে আমাদের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তবে তারা বেশ সতর্ক ছিলেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চাইলে তাদের নমুনা পরীক্ষা করতে পারেন। এর আগে অবশ্য তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। সে সময় নেগেটিভ এসেছে। আমাদের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।

এদিকে, এসব ভারতীয় গত মার্চ বা তারও আগে থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ, স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা ব্যবসায়িক কাজে এসে আটকে পড়ায় তারা যেমন এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তেমনই আক্রান্ত হয়ে দেশে ফেরার আগে আখাউড়া স্থলবন্দরে আসার পথে হয়তো এ ভাইরাস ছড়িয়েছেন নিজেদের অজান্তেই। ফলে এসব ভারতীয় যে যে অবস্থানে ছিলেন সেসব স্থানের বাংলাদেশিদের ভালোভাবে তাদের স্বজনদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিকভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকা ও উপসর্গ দেখা দিলে করোনার নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two − 2 =

Back to top button