করোনায় বেঁচে যাচ্ছে হাজারো ষাঁড়ের জীবন
করোনা সতর্কতায় এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে না স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ষাড়ের লড়াই। বুল-রিংয়ে মরতে হবে না হাজারো ষাড়কে। তাই এই মহামারি পরিস্থিতি যেনো আশীর্বাদ হয়ে এসেছে প্রাণীর জন্য।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাদ্রিদের লাস ভেন্তাস বুল রিংয়ে প্রতি বছর এসময়ে ম্যাটাডোর আর উন্মত্ত ষাঁড়ের লড়াইয়ে জমজমাট থাকে চত্বর। লাখো মানুষের সমাগমে গমগম করে ভেন্যু। এবার নেই কোনো আয়োজন। বড় উৎসবগুলো বাতিল হওয়ায় হুমকির মুখে এ শিল্পে জড়িত লাখো মানুষের জীবিকা। পুরো মৌসুম খেলা বন্ধ থাকলে নিঃস্ব হবেন অনেকে।
অ্যানিমেল রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট এইডা গ্যাসকন বলেন, মহামারির দুঃসময়ে এটা নিঃসন্দেহে সুখবর। কারণ এবার নির্যাতনের মধ্য দিয়ে হাজার হাজার ষাড়ের মৃত্যু হবে না। জানি, তাদের কসাইখানায় পাঠানো হবে। তবুও মন্দের ভালো, এমন নিষ্ঠুর একটি খেলা বাতিল হয়েছে।
স্পেনে এপ্রিল-মে থেকে শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত ষাঁড়ের লড়াইয়ের ভরা মৌসুম। দেশজুড়ে লকডাউন শিথিল হতে শুরু করলেও এ বছর উৎসব শুরুর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এতে প্রায় ৭৭ মিলিয়ন ইউরোর ক্ষতির মুখে পড়বে এ খাত সংশ্লিষ্টরা।
খামারি ভিক্টোরিনো মার্টিন বলেন, শীতকালীন উৎসব বাতিলেই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আমাদের। পুরো বছরের খেলা বাতিল হলে আমরা নিঃশেষ হয়ে যাবো।
লড়াইয়ের জন্য লালন পালন করলেও কসাইখানায় ষাঁড় বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছে খামারিরা। ৪/৫ বছর ধরে একটি ষাড়ের পেছনে ব্যয় হয় প্রায় পাঁচ হাজার ইউরো। অথচ বিক্রি হচ্ছে মাত্র পাঁচশ ইউরোয়।
আরেক খামারি বলেন, একটি ষাড়কে লড়াইয়ের উপযোগী করে গড়ে তোলা অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। পশুপ্রেমীরাও হয়তো আমাদের চেয়ে বেশি যত্ন নেয় না। হাজার বছরের সংস্কৃতির বিরোধিতা আর বহু পরিবারের উপার্জনের পথ বন্ধ না করে তাদের উচিত সেসবের খোঁজ নেয়া।
স্থানীয় সরকারের অনুদান বন্ধ হয়েছিল আগেই। আর পশুপ্রেমীদের বিরোধিতা তো আছেই। এখন করোনার আঘাতে স্পেনের ঐতিহ্যবাহী এ খেলার টিকে থাকাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে।