করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত, কবর খননে রাজি হয়নি কেউ, ৮ তরুণ আলেম করলেন দাফন
করোনা উপসর্গ নিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশীপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে মারা যান শুকুর আলী (৫৫)। সেখানেই পড়ে ছিল তার লাশ।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) মৃতের দাফন সম্পন্ন করতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ৮ তরুণ আলেম সকালেই গিয়েছিলেন ওই বাড়িতে। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা অপেক্ষার পর একটি অ্যাম্বুলেন্স ম্যানেজ হয়। লাশ নিয়ে যাওয়া হয় মৃতের নিজ বাড়ি উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের ঘোপপাড়া গ্রামে।
সেখানে কবর খনন করার মতো লোকও পাওয়া যায়নি। কেউ কবর খননে রাজি নয়। আলেমরা নিজেরাই কবর খননের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কেউ কোদাল পর্যন্তও দেয়নি। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর সহযোগিতায় একটি কোদাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। একাধারে ৬-৭ ঘণ্টা পিপিই পরে উপজেলার ঘোপপাড়া নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে লাশের দাফন কার্য সম্পাদন করায় প্রশংসায় ভাসছেন আট তরুণ আলেম।
আলেম মুফতি ফারুক নোমানী বলেন, করোনার ভয়ে এলাকার লোকজন কবর খননের জন্য কোদাল পর্যন্ত দিতে চাইলো না। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর সহযোগিতায় একটি কোদাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। মৃতের দাফন সম্পন্ন করতে বেলা দেড়টা পর্যন্ত পিপিই পরে থাকতে হয় আমাদের।
লাশ দাফন কার্যে অংশ নেন মাওলানা রুহুল আমিন, মুফতি ফারুক নোমানী, হাফেজ হেদায়েতুল্লাহ, মাওলানা তরিকুল ইসলাম, মাওলানা ইয়াসিন আলী, মাওলানা নাজির আহমাদ, হাফেজ দিনার ও মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান।
উল্লেখ্য করোনার উপসর্গ নিয়ে ঢাকা থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এসে শুকুর আলী নামের ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার ভোরে কালীগঞ্জ পৌরসভার কাশিপুর গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে মারা যান। মৃত শুকুর আলী কালীগঞ্জের ঘোপপাড়া গ্রামের মৃত মসলেম উদ্দীনের ছেলে। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ীর একটি তেল ফ্যাক্টরীর নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিল। এছাড়া তিনি ডায়াবেটিস রোগেও ভুগছিলেন।