করোনা পরীক্ষায় এবার ভারতের ‘ফেলুদা’
করোনা পরীক্ষায় এবার যোগ হল ‘ফেলুদা’। ভারতের একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি করোনাভাইরাস শনাক্তে কাগজ-ভিত্তিক এক নতুন পরীক্ষাপদ্ধতি উদ্ভাবন করছেন। বিজ্ঞানীরা এর নামকরণ করেছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের লেখা জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদার নামে ।
এতে করোনা পরীক্ষার ফল খুব দ্রুত পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এটি অনেকটা গর্ভধারণের পরীক্ষার মতো। ক্রিসপার নামের জিনভিত্তিক এক প্রযুক্তির সহায়তায় এই পরীক্ষা করা হবে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ফেলুদা কিটের ফলাফল পাওয়া যাবে এক ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে। খরচও খুব কম। খরচ পড়বে ৫০০ রুপি। অর্থাৎ বর্তমান বাজারমূল্যে বাংলাদেশের ৫৭৮ টাকার মতো।
ভারতের বিখ্যাত টাটা কোম্পানি এই ফেলুদা কিটটি তৈরি করবে। এটি সম্ভবত বিশ্বের প্রথম কাগজ ভিত্তিক কোভিড পরীক্ষাপদ্ধতি হবে। আর এটি বাজারে সহজলভ্য হবে।
ভারত সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা অধ্যাপক কে বিজয় রাঘবান বিবিসিকে বলেন, এটি সহজ, সুনির্দিষ্ট, বিশ্বাসযোগ্য ও কম খরচের পরীক্ষা। দিল্লিভিত্তিক সিএসআইআর-ইন্সটিটিউট অফ জিনোমিক্স অ্যান্ড ইনটিগ্রেটিভ বায়োলজির (আইজিআইবি) গবেষকেরা ফেলুদা কিট নিয়ে গবেষণা করেন। বেসরকারি পরীক্ষাগারগুলোতেও গবেষণা চলে। প্রায় দুই হাজার রোগীর নমুনা নিয়ে গবেষণা করা হয়। তাদের মধ্যে আগেই করোনা শনাক্ত হয়েছে এমন একজনও ছিলেন।
গবেষকরা দেখেন, নতুন পরীক্ষায় ৯৬ ভাগ সংবেদনশীলতা ও ৯৮ ভাগ যথার্থতা রয়েছে। কোনো পরীক্ষার যথার্থতা দুটি অনুপাতের ওপর নির্ভর করে। উচ্চমাত্রায় সংবেদনশীল পরীক্ষা করোনায় সংক্রমিত এমন বেশিরভাগ রোগীকে শনাক্ত করবে।
উচ্চমাত্রায় নির্ভুল পরীক্ষা যারা করোনায় সংক্রমিত হননি তাদের সবাইকে বাদ দেবে।
বাংলাদেশের রোগনিয়ন্ত্রণ, রোগতত্ত্ব ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সংবেদনশীলতা ও যথার্থতার যে মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে তাতে ভারতের এই কিটটি কার্যকর বলে মনে হয়েছে।’
পরীক্ষায় খুব বেশি ফলস নেগেটিভ বা ফলস পজেটিভ ফল আসেনি। ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য এই পরীক্ষাটির অনুমোদন দিয়েছে।