তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশের কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তায় বিশ্ব ব্যাংকসহ বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছন।
সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ‘ডায়ালগ অন প্রসপেক্ট অব সোলার পাওয়ার্ড ইরিগেশন টু ইনহেন্স ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ইন দ্য এগ্রিকালচার সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
সেচ কাজে ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু সহিষ্ণু, ব্যয় সাশ্রয়ী,পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি হিসেবে দেশে-বিদেশে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে। প্রতি বছর দেশে সেচের জন্য এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল চালিত পাম্প ব্যবহার হচ্ছে। এতে বছরে ডিজেল চালিত সেচ পাম্পে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি ডিজেল ব্যবহার হচ্ছে। ডিজেল চালিত সেচ পাম্পকে সোলার প্যানেলে পরিণত করা গেলে বছরে সাশ্রয় হবে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল।
মন্ত্রী বলেন, ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়ানো গেলে একদিকে পরিবেশ রক্ষা পাবে অন্যদিকে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং কার্বন নিঃসরণ কমবে।
তিনি বলেন, ডিজেল চালিত পাম্প মাঝে মাঝে নষ্ট হয়। এ জন্য কৃষককে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তা মেরামত করতে হয়। কিন্তু একটি সোলার প্যানেল নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২০ বছর ব্যবহার করা যাবে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়-ক্ষতি কমানোর প্রক্রিয়ার মতোই ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেচ পাম্পে ডিজেলের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার গুরুত্ব দিয়ে এর ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইটকল সেচে সোলার প্যানেল স্থাপনের কাজ করে আসছে। সরকারি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে ৪৪৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৭৮৯টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রেটিজিক অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করে কাজ করে আসছে। এখন পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে এই অ্যাকশন প্ল্যান বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্ব রোল মডেল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সমূহের অনুদান, সহজ ঋণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সফলভাবে এক হাজার ৫১৫টি সৌর চালিত পাম্প স্থাপন করেছে ইটকল। ইটকলের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো দেশে সৌর সেচ কর্মসূচি বাড়ানোর জন্য অর্থ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানির দক্ষতার উন্নয়নে ইটকলের অর্জন বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিশ্রুতি অর্জনে একটি সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে। আমাদের এনডিসি প্রতিশ্রুতি কেবল কার্বন নিঃসরণ কমাতেই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। জীবনের জন্য আমাদের বিনিয়োগ, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ইটকলের আয়োজনে ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মোঃ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল। এছাড়া বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার,
বিশ্বব্যাংক,জ্যাইকা,এডিবি,ইউএসএআইডি,ইউএনডিপি,জিইএফসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি বৃন্দ।
সূত্র : ইউএনবি