বিবিধ

গরুর নাম ‘বড় সাহেব’, আছে ‘বাহুবলিও’

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের শরীফুজ্জামানের খামারে রয়েছে ৩৬ মণ ওজনের গরু, নাম বড়সাহেব। ২৭ মণ ওজনের গরুর নাম ছোটসাহেব। এ ছাড়া শহরের নিউটাউন এলাকার খামারি আশরাফুল আলম রুজেনের রয়েছে ২৫ মণ ওজন করে তিনটি গরু। গরুগুলোর নাম রাজাসাহেব, বাহুবলি ও কালোমানিক। এখানকার কোরবানির পশুর হাটে এদের দাপুটে বিচরণ থাকবে বলে খামারি মালিকদের দাবি।

খামারি শরীফুজ্জামান জানান, তিনি ২০১৮ সালে ঢাকায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়িতে ১০টি গরু নিয়ে ‘জামান অ্যাগ্রো ফার্ম’ নামে খামারটি গড়ে তোলেন। সেই থেকে তিনি গরু মোটাতাজাকরণ করে আসছেন। এবারও তিনি তাঁর খামারে চারটি গরু মোটাতাজা করেছেন। এর মধ্যে ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি বড় গরু রয়েছে। ৩৬ মণ ওজনের গরুটির নাম দিয়েছেন ‘বড়সাহেব’। এক বছর আগে দেড় লাখ টাকায় কিনেছিলেন বড়সাহেবকে। তিনি এটির মূল্য হাঁকছেন ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাড়ি এসে ছয় লাখ টাকা দাম বলে গেছেন এক ক্রেতা। শরীফুজ্জামানের ধারণা, সাত থেকে আট লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে বড়সাহেবকে।

তাঁর খামারের ‘ছোটসাহেব’-এর ওজন সাড়ে ২৭ মণ। এটি তিনি দুই বছর আগে ৮৫ হাজার টাকায় কিনেছিলেন। তাঁর ধারণা, পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকায় বিক্রি হবে ছোটসাহেব।

শরীফুজ্জামান আরো জানান, প্রতিদিন তাঁর এই বড়সাহেব আর ছোটসাহেবকে একনজর দেখতে ভিড় করে অনেক মানুষ।

এদিকে, প্রায় ১৫ বছরের পুরোনো খামারি আশরাফুল আলম রুজেনের খামারে এবার দেশি-বিদেশি জাতের ২৫টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান জাতের রাজাসাহেব, বাহুবলি আর কালোমানিকের ওজন এক হাজার পাঁচ থেকে এক হাজার কেজি। তাঁর ধারণা, গড়ে ছয় থেকে সাত লাখ টাকা করে বিক্রি করা যাবে গরু তিনটি।

এদিকে, স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিন বছর ধরে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করে বিক্রি করে আসছেন শুভ মিয়া। এবারও তিনি চারটি ক্রস জাতের গরু মোটাতাজা করেছেন। এর মধ্যে তিনটি গরু স্থানীয় এক ব্যক্তি কেনার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন। বাকি একটি তিনি অন্যত্র বিক্রি করবেন।

খামারি শরীফুজ্জামান, আশরাফুল আলম রুজেন, শুভ মিয়াসহ উপজেলার কয়েকশ খামারি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ঠিকমতো যদি কোরবানির পশুর হাট না বসে এবং পাশের দেশ থেকে বৈধ অথবা চোরাপথে পশু প্রবেশ করে, তবে তারা লোকসানের মুখে পড়বে। তাই তারা কোরবানির পশুর হাট বসতে এবং পাশের দেশ  থেকে কোরবানির পশুর প্রবেশ বন্ধে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান জানান, ভৈরবে প্রতিবছরের মতো এবারও কোরবানির ঈদ উপলক্ষ করে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করেছে এখানকার কৃষক ও খামারিরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেড় হাজার খামারে ৯ হাজারের বেশি গরু, মহিষ ও ছাগল মোটাতাজা করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে পুরোপুরি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে, স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ পরিত্যাগ করে সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে পশুগুলোকে লালনপালন করেছেন বলেও তিনি জানান।

খামারগুলোতে এবার স্থানীয় চাহিদার তুলনায় প্রায় তিন হাজার গবাদিপশু বেশি পালিত হয়েছে উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা আরো জানান, এই বাড়তি পশুগুলো দেশের অন্যত্র বিক্রি করে এখানকার খামারিরা লাভবান হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − six =

Back to top button