Breakingধর্ম ও জীবন

ঘরে মাকড়সা জাল বুনলে কি অভাব-অনটন দেখা দেয়?

সমাজে প্রচলিত আছে যে, মাকড়সার জাল ঘরে থাকলে অভাব-অনটন দেখা দেয়— এ কথাটি অবাস্তব। কুরআন-হাদিসে এর কোনো প্রমাণ নেই।

কোনো কোনো তাফসিরের কিতাবে হজরত আলী (রা.) থেকে এ ধরনের একটি কথা উল্লেখ আছে বলে পাওয়া যায়। কিন্তু এর সনদ মুনকার, সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। তাই মাকড়সার জাল এবং অন্যান্য ময়লা-আবর্জনা থেকে ঘরবাড়িকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যে কর্তব্য তাতো বলার অপেক্ষা রাখে না।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মানুষদের আল্লাহতায়ালা পছন্দ করেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমের বিভিন্ন স্থানে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। ’ –সূরা আল বাকারা: ২২২

‘বলো, অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের প্রাচুর্য তোমাকে বিস্মিত করে। অতএব, হে বুদ্ধিমানগণ, আল্লাহকে ভয় করো- যাতে তোমরা মুক্তি পাও। ’ –সূরা মায়েদা: ১০০

‘অবশ্যই সাফল্য লাভ করবে সে, যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়। ’ –সূরা আল আলা : ১৪

আর ঘরের মধ্যে যে সব মাকড়সা থাকে এবং ঘরের কোণে ও এখানে-সেখানে জাল বুনে সে সব মাকড়সাকে মেরে ফেলা বা সেগুলোর জাল ভেঙ্গে ফেলায় কোন দোষ নেই। কেননা হাদিসে এ সম্পর্কে কোন নিষেধাজ্ঞা আসে নি।

তাছাড়া মাকড়সা খাওয়ার জন্য ঘরের মধ্যে টিকটিকি, সাপ-বিচ্ছু ইত্যাদি নানা ক্ষতিকর প্রাণীর আগমন ঘটতে পারে-যা নি:সন্দেহে আমাদের জন্য ক্ষতিকর।

মাকড়সার জালে বিভিন্ন কীটপতঙ্গ আটকা পড়ে মারা যায়। মরে শুকিয়ে থাকে। তারপর সেখান থেকে নানা রোগ-ব্যাধি ও জীবাণু ছড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোন কোন মাকড়সা বিষধর। অনেক সময় এগুলো খাদ্যদ্রব্যে মরে পড়ে থাকে। এরা দেয়াল, বই-পুস্তক ইত্যাদিতে মল-মূত্র ত্যাগ করে নোংরা করে।
সুতরাং ঘরে মাকড়সা থাকা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার পরিপন্থী এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।

আর মাকড়সা মারার ক্ষেত্রে হুকুম হলো, মাকড়সা যদি ক্ষতিকর বা বিষাক্ত প্রকৃতির হয়, তবে তা মেরে ফেলা জায়েজ। কিন্তু যদি তা ক্ষতিকর না হয় সে ক্ষেত্রে না মেরে বাসাবাড়ি থেকে তা ঝেড়ে ফেলে দেওয়াই শ্রেয়। আল্লাহতায়ালা সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪৭৪

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + 3 =

Back to top button