BreakingLead Newsআন্তর্জাতিক

ডলার আরও ব্যয় বহুল হবে

বৈদেশিক ঋণের সুদ হার বাড়বে

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমস দেশটির মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে আবারও নীতি সুদের হার বাড়িয়েছে।

এই দফায় নীতি সুদের হার বাড়াল দশমিক ২৫ শতাংশ। ফলে এখন সুদের এ হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে সাড়ে ৫ শতাংশে উন্নীত হলো। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বিকালে ওই সংস্থাটির ওয়েবপেইজ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডলারের দাম আরও বেড়ে যাবে। এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও। ফলে এ দেশেও ডলারের দাম আরও বাড়তে পারে। ডলার সংকট মোকাবিলায় বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

কিন্তু এ খাতে আয় বাড়ানো যাচ্ছে না। উল্টো খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমুখী বা ডলারের প্রবাহ কমানোর মুদ্রানীতি অনুসরণ করছে। এর আওতায় সুদের হার বাড়ানো হচ্ছে। গত ১৬ মাসে মোট ১১ দফা নীতি সুদের হার বাড়ানো হয়েছে।

ফলে স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও সুদের হার বাড়িয়ে ডলারকে ব্যয়বহুল করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার এখন বেড়ে ৫ শতাংশের ওপরে উঠে গেছে। দেড় বছর আগে এর সুদের হার ছিল ১ শতাংশের কম।

এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডলারের দাম বাড়ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে ডলার সংকট ও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ায় আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। গত দেড় বছরে ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদের হার বাড়িয়ে এখন গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এ হার গত বছরের শুরুতে এক শতাংশের নিচে ছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর এপ্রিল থেকে তাদের নীতি সুদের হার বাড়তে থাকে।

যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে এ হার আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। চলতি বছরের মধ্যে এ হার আরও দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে।

সূত্র জানায়, এর প্রভাবে আন্তর্জাতিকভাবেই ডলারের দাম আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলও ডলারের দাম আরও বাড়ার আভাস দিয়েছে। বাংলাদেশে ডলারের দাম বেড়ে এখন আমদানিতে ১০৯ টাকার বেশি দরে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। নগদ ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১১ থেকে ১১২ টাকায়।

তিন মাস বা ছয় মাস মেয়াদি আগাম ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৩ থেকে ১১৪ টাকায়। এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয় সেভাবে বাড়ছে না। আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হলেও তা বেশিদিন নিয়ন্ত্রিত রাখলে দেশের আমদানিনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এ বিবেচনায় আমদানিতে কিছুটা শিথিলতা দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপও বেশি। ফলে আগামীতে ডলারের দাম আরও বাড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদের হার বাড়ানোর ফলে বৈদেশিক ঋণের সুদের হারও বেড়ে যাবে। ফলে দেশ বৈদেশিক ঋণ কম নেবে। এছাড়া মুডিস ও এসএন্ডপি গ্লোবাল সম্প্রতি বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণমান কমানোর ফলে এখন ঋণও কম মিলবে। যেগুলো পাওয়া যাবে তার বিপরীতে বাড়তি সুদ দিতে হবে।

এদিকে ফেডারেল রিজার্ভ আরও আভাস দিয়েছে, মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদের হার আরও বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। গত আগস্টে এটি বেড়ে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ শতাংশে গিয়েছিল। এ হার তারা আগামী বছরের মধ্যে ২ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + 9 =

Back to top button