দেশবাংলা

নাম তার ‘বিগশো’, দাম ২০ লাখ

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতি ও কোনো প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ ছাড়া পালন করা ‘বিগশো’ ও ‘কালা মানিক’ নামে বিশাল আকৃতির দুটি গরু এখন বিক্রির জন্য প্রস্তুত। ‘বিগশো’ নামের একটি গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ লাখ। ‘কালামানিক’ নামের অন্য আরো একটি গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ লাখ টাকা।

এদিকে গরু দুটি দেখতে প্রতিদিন লোকজনকে ভিড় করতে দেখা গেছে। গরু দুটিকে বিশেষ যত্ন আর পরিচর্যায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে লালনপালন করছেন জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামের খামারি মো. বাবুল শেখ।

বর্তমানে এরা কোনো হাটে না উঠলেও চলতি মাসের শুরু থেকেই প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকা থেকে ক্রেতা ও লোকজন গরু দুটি দেখতে এবং দরদাম করতে খামারে আসছে।

বাবুল শেখ জানান, কাঙ্ক্ষিত দামে দুটি গরু একসঙ্গে কোনো ক্রেতা কিনলে তাঁকে উপহার হিসেবে অপর একটি গরু ফ্রিতে দেবেন।

জানা যায়, বাবুল শেখ অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি ১৫ বছর ধরে গরুর খামার করে আসছেন। বর্তমানে তাঁর খামারে ছোট বড় ১২৫টি বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। তিন বছর আগে দুই থেকে তিন মাসের ব্যবধানে ‘বিগশো’ ও ‘কালামানিক’-এর জন্ম হয়। এর পর থেকে বাছুর দুটি বিশেষ যত্ন সহকারে লালন পালন করেন তিনি।

প্রতিটি গাভি দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে দুধ দিলেও তিনি দুধ সংগ্রহ বন্ধ রাখেন এবং টানা ১২ মাস সম্পূর্ণ দুধ এদের খাওয়ান। পরে দেশীয় ঘাস, ভুট্টা ও চালের গুঁড়া, খৈল ইত্যাদি দানাদার খাবার দেন। আলাদা একটি শেড করে গরু দুটি রাখা হয়। প্রতিদিন তিনবেলা গোসল করানো হয়। বর্তমানে প্রতিদিন দুটি গরুর জন্য প্রায় ২৫ কেজি দানাদার খাবার লাগে।

বর্তমানে ‘ব্রাহ্মা শাহীওয়াল’ জাতের ‘বিগশো’র ওজন এক হাজার ২০০ কেজির বেশি এবং ‘শাহীওয়াল’ জাতের ‘কালামানিক’-এর ওজন এক হাজার কেজি। বিগশোর উচ্চতা প্রায় সাড়ে ৬ ফুট, দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ ফুটের বেশি ও বুকের বেড় সাড়ে ১০ ফুট। কালা মানিকের দৈর্ঘ্য সাড়ে নয় ফুট, উচ্চতা ছয় ফুটের বেশি ও বেড় নয় ফুট।

খামারি বাবুল শেখ জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শ মতে তিনি গরু দুটিকে কৃমিনাশক ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ বা কেমিক্যাল দেওয়া খাবার খেতে দেননি। তিনি ‘বিগশো’ ২০ লাখ ও ‘কালা মানিক’ ১২ লাখ টাকা দাম আশা করছেন।

এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন ক্রেতা ‘বিগশো’র দাম ১০ লাখ ৫০ হাজার ও ‘কালামানিক’-এর দাম সাত লাখ পর্যন্ত বলেছে।

বাবুল আরো জানান, গরু দুটির বয়স তিন বছরের বেশি এবং মাত্র দুই দাঁত হয়েছে। কোনো কারণে গরু দুটি বিক্রি করতে না পারলে তবে আরো এক বছর পালন করার ইচ্ছে আছে তাঁর।

কেন গরু দুটির এমন নাম রাখা হল জানতে চাইলে বাবুল শেখ  বলেন, ‘মূলত টিভিতে রেসলিং দেখে বিগশো এবং অপরটি কুচকুচে কালো ও খুবই আদরের গরু বলে কালা মানিক নামকরণ করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ছাইফুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় পাঁচ শতাধিক খামার রয়েছে। প্রতিনিয়ত এসব খামার পরিদর্শন করা হয়। বাবুল শেখের গরু দুটি অবশ্যই বড় এবং দুটি গরু দেশীয় খাবারে বড় হয়েছে। এসব গরুতে কোনো প্রকার স্টেরয়েড বা হরমোনাল ওষুধ দেওয়া হয়নি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − ten =

Back to top button