সিলেটে পরিবেশ ধ্বংসের কারণে বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্রিল সংযোজনে পুলিশের নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে পরিবহণ সংগঠনগুলোর ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।
এর মধ্যে বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের ধর্মঘটে নামে ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ, বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও পাথর ব্যবসায়ী মালিক ঐক্য পরিষদ। আজ বুধবার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলছে।
এ ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্রিল সংযোজনের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ কয়েকটি দাবিতে গত সোমবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে নেমেছিল সিএনজি-অটোরিকশা মালিক ঐক্য পরিষদ। আজ থেকে আবারো ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে নেমেছে সংগঠনটি।
এদিকে, ধর্মঘটের কারণে আজ বুধবার সকালে কদমতলী ও কুমারগাঁও বাস টার্মিনাল থেকে কোনো পরিবহণ ছেড়ে যায়নি। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। বিশেষ করে কর্মজীবী কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষেরা হেঁটে অথবা বাড়তি খরচ করে মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এ ছাড়া, বন্ধ রয়েছে পণ্য পরিবহণও। এর ফলে সিলেট প্রায় অচল এবং সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে, রেল ও আকাশপথ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে মানুষের ভীড় বাড়ায় টিকেট পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
সিলেট জেলা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক জানিয়েছেন, পাথর কোয়ারিগুলো সচল করার দাবিতে আহ্বান করা ধর্মঘটে তারাও একাত্মতা পোষণ করেছেন। ফলে মঙ্গলবার (গতকাল) থেকে সিলেটে যাত্রী ও পণ্যবাহী সব ধরনের পরিবহণ বন্ধ থাকবে।
এদিকে, নিজেদের দাবি নিয়ে গত সোমবার বিকেলে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মালিক ঐক্য পরিষদের নেতারা।
সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে মালিক ঐক্য পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল বলেন, ‘বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। তিন দিনের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।’
সিলেট বিভাগের অন্য তিন জেলায়ও ধর্মঘট চলবে জানিয়ে গোলাম হাদী ছয়ফুল বলেন, ‘আমরা সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেই এ কর্মসূচি দিয়েছি।’
পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া—এই পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।