Lead Newsকর্পোরেট

পুঁজি বাজারে ইতিহাস ছোঁয়া লেনদেন

ব্যাংকগুলোতে আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত তারল্য আছে, যার মধ্যে ৬২ হাজার কোটি টাকা একেবারেই অলস। এই টাকা বসিয়ে রেখে এক পয়সাও আয় হচ্ছে না ব্যাংকগুলোর।

এই অর্থ ব্যাংকগুলো ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ বিলে বিনিয়োগ করে আয় করতে পারবে। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুঝি বাণিজ্যিক ব্যাংকের টাকা নিয়ে নিচ্ছে।

ব্যাংকে থাকা অলস টাকা তুলে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ব্যাংকগুলো লাভবান হলেও বিষয়টি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যায় পুঁজিবাজারে এই খাত নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। ব্যাংকিং খাতে কমেছে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর।

তবে ব্যাংক, বিমা, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে পতনের দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ।দিন শেষে লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩৫ কোটি ৭ লাখ ৮ হাজার টাকা। এর আগে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ২ হাজার ৯৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা। এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আর তিনটি কর্মদিবসে।

২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর লেনদেন ছিল ৩ হাজার ১৭৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। পরের কর্মদিবসে ৫ ডিসেম্বর মহাধস শুরুর দিন লেনদেন ছিল ৩ হাজার ২৪৯ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন। ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৯০ লাখ ৮২ হাজার টাকা লেনদেন বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস সোমবার লেনদেনের শুরুতে পতন ছিল বেশি আর এ কারণে সূচকও এক পর্যায়ে পগে যায় ৭৩ পয়েন্ট। তবে পরে দাম কমার হার কমে আসা আর প্রধান প্রধান অন্য খাতগুলোর বেশিরভাগে দর বৃদ্ধির কারণে সূচক বেড়ে যায়।

দিন শেষে আগের দিনের চেয়ে সূচকে যোগ হয়েছে ৩২ পয়েন্ট। সূচকের অবস্থান এখন ২০১১ সালের ২৬ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। সেদিন ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৬৪২ পয়েন্ট। এখন অবশ্য ডিএসইর প্রধান সূচকের না, ডিএসইএক্স সূচক আর মান অনুযায়ী আগের সূচক এখনকার চেয়ে কিছুটা বেশি থাকার কথা।

তবে ব্যাংক খাতের চেয়ে বেশি পতন হয়েছে দর সংশোধনে থাকা বিমা খাতে। পক্ষান্তরে দারুণ একটি দিন গেছে লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে বস্ত্র খাতেও।

দুর্দান্ত লভ্যাংশ দিয়ে আসা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে দর পতনও অনেকটা বিস্ময়করই বলা যায়। অথচ এই দিন তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণার সংবাদ আসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ডে। এই তিনটি ফান্ডই গত বছর ব্যাপক লোকসান দেয়ার কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি, কিন্তু এবার বেশ ভালো মুনাফা করে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দিয়েছে।

বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীরা অবশ্য এই উদ্বেগটিকে কাজে লাগিয়েছেন, যার প্রমাণ লেনদেনে। আগের কর্মদিবস বৃগস্পতিবার দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন দেখেছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। সেটিও ছাড়িয়ে লেনদেন আজ ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ অবস্থান দেখা গেছে।

আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সেখান থেকে বেড়েছে আরও ৪২৩ কোটি টাকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + 19 =

Back to top button