ফেসবুকের কল্যাণে ৬ বছর পর স্বজন ফিরে পেলেন রফিজ উদ্দিন
ফেসবুকে ভিডিও দেখে হারিয়ে যাওয়া রফিজ উদ্দিনকে খুঁজে পেয়েছেন তার স্বজনরা। হারানোর ছয় বছর পরে রফিজকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তার স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার প্রত্যন্ত রসুলপুর বাজারে ছিন্নমূল হিসেবে থাকা রফিজ উদ্দিনকে তার স্বজনদের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা।
এর আগে, ৬ সেপ্টেম্বর রফিজ উদ্দিনের ছবি, কিছু বক্তব্য ও রসুলপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য দিয়ে ‘শরণখোলা প্রতিদিন’ নামে একটি ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেন স্থানীয় শাহিন হাওলাদার। ভিডিওতে শাহিন হাওলাদার রফিজ উদ্দিনের পরিবার ও স্বজনদের খুঁজে পেতে সহযোগিতার আহ্বান জানান সবাইকে।
পরে রফিজ উদ্দিনের পরিবারের লোকেরা তাকে চিনতে পেরে শাহিন হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কথা বলে নিশ্চিত হয়ে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার উলফা বেনিরগোপ গ্রামের দরবেশ আলীর ছেলে রফিজ উদ্দিনকে (৫৬) নিতে শরণখোলায় আসেন তার স্বজনরা।
রফিজ উদ্দিনের ভাইয়ের ছেলে শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর আমার ফুফুর মৃত্যুর খবর শুনে ওই বাড়িতে যান আমার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী চাচা রফিজ উদ্দিন। এরপর আর ফিসে আসেননি। আমরা অনেক খোঁজাখুজি করেছি, কিন্তু পাইনি। তার স্ত্রী রহিমা বেগম ও ছেলে সোহেল রানা ছয় বছর ধরে তাকে খুঁজে না পেয়ে পাগল প্রায়। এ অবস্থায় ৮ সেপ্টেম্বর ফেসবুকের একটি ভিডিওতে চাচাকে দেখতে পাই। চাচার কন্ঠ শুনে নিশ্চিত হয়ে তাকে নিতে শরণখোলায় আসি আমরা। ছয় বছর পর চাচাকে পেয়ে আমরা খুব খুশি। এজন্য শাহিন হাওলাদারকেও ধন্যবাদ জানাই।
শাহিন হাওলাদার বলেন, প্রায় চার বছর ধরে রসুলপুর বাজারে থাকতেন মানসিক প্রতিবন্ধী রফিজ উদ্দিন। নিজের ঠিকানা ঠিকমতো বলতে পারতেন না। বাজারের দোকানিরা দেওয়া সামান্য খাবার খেয়ে তার জীবন কাটতো। ঘুমাতেন বাজারের বিভিন্ন দোকানের সামনের ফাঁকা স্থানে। ওনার সঙ্গে অনেকদিন কথা বলেছি আমি, কিন্তু নিজের পুরো ঠিকানা বলতে পারেন না তিনি। পরে তার সঙ্গে আলাপ চারিতার একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করি। সেই ভিডিও দেখে তার স্বজনরা যোগাযোগ করেন আমার সঙ্গে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যারের সঙ্গে কথা বলে একটা লিখিত রেখে তার স্বজনদের কাছে রফিজ উদ্দিনকে তুলে দেই আমরা। রফিজ উদ্দিনকে তার স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত।