সড়ক আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের দাবিতে আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে খুলনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান তারা।
পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, দুর্ঘটনার মামলা জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারায় সংশোধন চান চালকরা। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে।
তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দফতরে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আইনটি সংশোধন ছাড়াই বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খুলনায় সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ২১ ও ২২ নভেম্বর শ্রমিক ফেডারেশন বর্ধিত সভা ডেকেছে। ওই সভার এজেন্ডাগুলোর মধ্যে এক নম্বরে আছে সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
এদিকে হঠাৎ করে খুলনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনে কোনো কারণে দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে চালকদের মৃত্যুদণ্ড এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আমাদের এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই এবং বাস চালিয়ে আমরা জেলখানায় যেতে চাই না।
বাংলাদেশে এমন কোনো চালক নেই যে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে পারবে। কারণ একজন চালকের বেতন ১৫-২০ হাজার টাকা। এই বাজারে যা দিয়ে সংসার চালানো, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালানো দায়। সেখানে এত জরিমানা কি করে দেয়া যাবে। এ কারণেই নতুন পরিবহন আইন সংস্কারের দাবি জানান শ্রমিকরা। নইলে তারা বাস চালাবেন না।
শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, সড়কে অবৈধ নসিমন-করিমন চলে, তাদের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে। এসব যানবাহন বন্ধ ও চালকদের জরিমানা করা হয় না। সব জেল-জরিমানা হয় বাসচালকদের।
খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সোনা বলেন, শ্রমিকরা ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দণ্ডের ভয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই তারা এসব করছে।
এদিকে ভোরে ঈগল পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের বাস মহানগরীর রয়্যাল কাউন্টার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তবে সকাল ৯টার পর থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।