গাজীপুরের এক হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নিজ সন্তানকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন অসহায় বাবা–মা। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ সেই নবজাতককে উদ্ধার করে বাবা–মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়। গতকাল শুক্রবার গাজীপুরের কোনাবাড়ি সেন্টাল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবু লাইচ মো. ইলিয়াস জিকু জানান, “গত ২১ এপ্রিল গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় সেন্ট্রাল হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি হন কেয়া খাতুন (২০)। ওই দিন সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। এটি কেয়া খাতুন ও শরীফ হোসেন দম্পতির প্রথম সন্তান। হাসপাতালে ১১ দিন ভর্তি থাকায় বিল আসে ৪৭ হাজার টাকা। হাসপাতালের এ বিপুল পরিমাণ বিল স্বামী শরীফের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব ছিল না।”
তিনি বলেন, পরে কেয়া খাতুন ও তার স্বামী শরীফ হাসপাতালের বিল দিতে না পারায় নিজের সন্তানকে প্রতিবেশী এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। সন্তান বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন। শুক্রবার (১ মে) তারা সন্তানকে বিক্রি করে দিয়ে নগরীর কাশিমপুর এলাকার এনায়েতপুরে তাদের বাড়িতে চলে যান। পরে বিষয়টি পুলিশের এডিশনাল আইজির (এসবি) মাধ্যমে খবর পান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন।
তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। পরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নিজেই হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে দিয়ে ওই নবজাতককে তার মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবু লাইচ মো. ইলিয়াস জিকু বলেন, মা তার নিজের সন্তানকে কাছে পেয়ে তার মাতৃত্বের সাধকে পূরণ করেছে। বর্তমানে মা এবং ছেলে সুস্থ আছে।
