ভারতীয় জনগণ ভালো, কিন্তু তারা ধর্মান্ধদের দ্বারা শাসিত: ইমরান খান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন – ভারতীয় জনগণ ভালো, কিন্তু তারা ধর্মান্ধদের দ্বারা শাসিত হচ্ছে। প্রতিবেশী দুই দেশের সীমান্ত উত্তেজনার ক্ষেত্রে ‘শুধু পাগল মানুষেরাই ভারত ও পাকিস্তানের মতো দুই পারমাণবিক শক্তিকে মুখোমুখি করার কথা ভাবতে পারে’ বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
কাশ্মির ইস্যু নিয়ে ইমরান বলেন, প্রতিটি ফোরামে কাশ্মিরের বিষয়টি উত্থাপন করা পাকিস্তানের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে ভারত যদি পাকিস্তানকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে তবে ২০১৯ সালের মতো উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।
ইসলামোফোবিয়া প্রসঙ্গে ইমরান খানের মন্তব্য হচ্ছে, মুসলিম নেতারা কখনোই পশ্চিমের সামনে ইসলামের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেননি, বিশেষ করে ৯/১১-এর পর। এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলো ইসলামোফোবিয়ার মুখে পড়েছে। যদিও ইসলামের সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। পরিস্থিতি পাল্টানোর জন্য মুসলিম বিশ্বকে জাতিসংঘের মতো ফোরামে যৌথ অবস্থান নিতে হবে।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর দারিদ্র্যের প্রধান কারণ দুর্নীতি। নেতৃত্বের দুর্নীতির কারণেই দেশগুলো এতটা দরিদ্র। এটাই উন্নয়নশীল অধিকাংশ দেশের বাস্তবতা। এখানে সম্পদের অভাব মুখ্য কারণ নয়।
তিনি মনে করেন দুর্নীতি এমন একটি জিনিস, যা দেশকে ধ্বংস করে দেয়। দরিদ্র দেশগুলো তাদের সম্পদের অভাবে নয় বরং দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের কারণেই দরিদ্র। এসব দেশের শাসকগোষ্ঠী নিজের দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে এবং অফশোর অ্যাকাউন্টে জমা করে।
আইনের শাসন ও জনকল্যাণ মদীনা রাষ্ট্রের দুটি পথপ্রদর্শক নীতি- উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, একটি সমাজ তখনই সভ্য হয় যখন সেখানে আইনের শাসন থাকে। আইনের শাসন না থাকলে সে সমাজের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। যখন মন্ত্রীরা চুরি করতে শুরু করেন, তখন কিছুতেই সে দেশ উন্নতি করতে পারবে না।
সাক্ষাৎকারে পাক প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশের দুর্নীতির অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, পাকিস্তানের রাজনীতি দুটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। উভয় পক্ষই আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সম্পদের পাশাপাশি অর্থ ও মিডিয়া ব্যবহার করেছে। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা মাফিয়াদের সাথে লড়াই করার মতো। আমার লড়াই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে। যদি কেউ আমার কোনো মন্ত্রীর দুর্নীতি তুলে ধরেন, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।