আন্তর্জাতিক

ভারতীয় দূতাবাস কর্মীদের পিটিয়ে নোংরা পানি খাওয়ানোর অভিযোগ

গত সোমবার সকালে নাটকীয়ভাবে তাদের অপহরণ করার ১০ ঘণ্টা পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। মাঝের এই সময়ে তাদের ওপর কী ধরনের অত্যাচার চালিয়েছে অপহরণকারীরা, তা জানালেন পাকিস্তানে কর্মরত ভারতীয় দূতাবাসের ওই দুই কর্মী।

গতকাল মঙ্গলবার পল সেলভাদাস ও দ্বিমু ব্রহ্ম এক বিবৃতিতে পুরো ঘটনা জানিয়েছেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে পৌনে ৯টার মধ্যে ঘটনাটির সূত্রপাত। ওই সময় দূতাবাসের গাড়িতে চড়ে কাজে যাচ্ছিলেন পলরা। ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসের কাছেই একটি পেট্রল পাম্পের সামনে চার-পাঁচটি গাড়ি তাদের ঘিরে ধরে।

প্রায় ১৫ জন তাদের অপহরণ করে। চোখ বেঁধে, কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে, হাতকড়া পরিয়ে তাদের অজ্ঞাত এক জায়গায় নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

এ ঘটনায় পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই জড়িত বলে মনে করছে ভারত। অপহৃতরা জানিয়েছেন, বেলা প্রায় ২টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দূতাবাসের কোন কর্মী কী কাজ করেন, কার দায়িত্ব বা ক্ষমতা কতদূর, সেসব ব্যাপারে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চাওয়া হয়।

সেই সঙ্গে কিল-চড়-থাপ্পড় পড়তে থাকে তাদের ওপর। এমনকি রড দিয়েও পেটানো হয় তাদের। জোর করে নোংরা পানি খেতে বাধ্য করা হয় ওই দু’জনকে।

অভিযোগ উঠেছে, জোর করে তাদের একটি পথ দুর্ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করানো হয়। ক্যামেরার সামনে তাদের বলতে বাধ্য করা হয়, যে তারা গাড়িতে করে বহিরাগতদের নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনে আসেন। সেখানে গোপন বৈঠক চলে।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই দুই কর্মীকে অপহরণকারীরা হুমকি দেয়, এই শেষ নয়, ভবিষ্যতেও ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের সঙ্গে এ ধরনের ব্যবহার করা হবে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দু’জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। সেখানে তাদের ইনজেকশন দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়া ওই দূতাবাস কর্মীদের  ঘাড়ে, কাঁধে ও শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

পাকিস্তান সরকারের দাবি, সোমবার সকালে ওই দুই কর্মীর বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় এক পথচারী জখম হন। সে কারণে স্থানীয় জনতা তাদের মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

সেই দাবি অবশ্য মেনে নেয়নি ভারত। মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দূতাবাস কর্মীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তানে ভারতীয় দূতাবাস, তার সমস্ত কর্মী, কূটনীতিক ও তাদের পরিবার এবং সম্পত্তির নিরাপত্তার সব দায়-দায়িত্ব পাকিস্তানের।

এসব করে, ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ থেকে নজর সরানোর চেষ্টা করছে পাকিস্তান। এদিকে মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতি দিয়ে ভারতের সব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তান।

সূত্র : আনন্দবাজার

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =

Back to top button