করোনাভাইরাস মহামারীকালে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ট্রেন চলাচলের যে ব্যবস্থা হয়েছে, তা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। মন্ত্রী বলেন, ভাড়া বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
মহামারীর মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে সব আসন পূর্ণ করে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও ট্রেনে এখনই সেরকম কোনো সিদ্ধান্ত আসছে না বলেই জানিয়েছেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লাগেজ ভ্যান সংগ্রহে সোমবার রেলভবনে চীনের এক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে রেলমন্ত্রী বলেন, “সব ট্রেন আমরা পর্যায়ক্রমে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখন উপরের দিকে যাবে না নিচের দিকে নামবে তা এখনও আমার নিশ্চিত নই। বাস আসন পূর্ণ করে আগের ভাড়ায় চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, আমরা তেমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি।”
রেলের ভাড়া বাড়ছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা রেলের ভাড়া বৃদ্ধির কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি, তবে এ বিষয়ে গবেষণা চলছে ভবিষ্যতের জন্য। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ট্রেন চালাতে। তিনি পণ্য পরিবহন করে রেলের আয় বাড়াতে বলেছেন।”
ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, “ভবিষ্যতে যখন মানুষের সামর্থ্য বাড়বে, যে সার্ভিস দিচ্ছি সেই সার্ভিস যখন বৃদ্ধি করতে পারব, যখন একটা স্বাভাবিক অবস্থা আসবে, তখন সেটা (ভাড়া বৃদ্ধি) নিয়ে চিন্তা করতে পারি কিনা- সেটি নিয়ে দেড় বছর আগে একটি কমিটি করে দায়িত্ব দিয়েছিলাম।
“সেই কমিটি সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে। তার মানে এই নয় যে আমরা রেলের ভাড়া বৃদ্ধি করছি। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে যে প্রশ্নগুলো তোলা হচ্ছে, সেটি কিন্তু সঠিক না।”
নতুন করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ৩১ মে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সংক্রমণ এড়াতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে প্রথমে আট জোড়া এবং পরে ৩ জুন আরও ১১ জোড়া ট্রেন যাত্রী পরিবহন শুরু করে।
১৫ অগাস্টের পর পর্যায়ক্রমে সব আন্তঃনগর ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৬ অগাস্ট ১৩ জোড়া এবং ২৭ অগাস্ট থেকে আরও ১৮ জোড়া ট্রেন চালু হয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ জোড়া ট্রেন চালু হলে মোট ৬৭ জোড়া ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধের কিছু বিষয় শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
যাত্রার ৫ দিন আগে থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ দিন আগে থেকে টিকেট বিক্রি করা হবে।
এছাড়া ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা, কফি, বোতলজাত পানি, চিপস-বিস্কুটসহ প্যাকেটজাত খাবার সরবরাহ শুরু হবে।
১০ সেপ্টেম্বর থেকে বিমানবন্দর, জয়দেবপুর ও নরসিংদী স্টেশন পুরোপুরি খুলে যাবে, যা করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বন্ধ ছিল।
তবে টিকেট শুধু অনলাইনে বিক্রি এবং অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।