ভাইরাল

মজা করে আনারসে বারুদ ভরে খাইয়ে মা হাতিকে নির্মমভাবে হত্যা

উৎসব-অনুষ্ঠানে রাস্তার কুকুর-বিড়ালদের লেজের গোড়ায় পটকা বা আতসবাজি বেঁধে দিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠার মতো বাজে ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু গর্ভবতী হাতির খাবারে বারুদ পুরে দিয়ে তাকে খাইয়ে খুন করার ঘটনা বোধ হয় বিরল। সম্প্রতি ভারতের কেরালা রাজ্যে ঘটেছে এমন অমানবিক ঘটনা। যে খবর প্রকাশ্যে আসতেই অনলাইন দুনিয়ায় ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অনেকেই।

উত্তর কেরালার মালাপ্পুরম জেলার একটি গ্রামে এই গর্ভবতী হাতিটি ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খাবার পাচ্ছিল না জঙ্গলে। তাই অরণ্য থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে এসেছিল খাদ্যের সন্ধানে। ‘সভ্য সমাজে’ পা রাখাটাই বোধ হয় কাল হল তার! জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসার পরও কাউকে আক্রমণ করেনি। কাউকে বিপদের মুখে ঠেলেও দেয়নি এই অসহায়-অবলা প্রাণীটি। কিন্তু গ্রামবাসী ভয় পেয়েছিল, যদি কোনো ক্ষতি করে সে। তাই আগেভাগেই অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে নৃশংসভাবে হাতিটিকে খুন করার ছক কষে ফেলে তারা। বারুদে ঠাসা আনারস খেতে দেওয়া হয়েছিল অভুক্ত হাতিটিকে। ফলে গর্ভে থাকা সন্তানসহ হাতিটির মৃত্যু হয়। অভিযোগের তীর গ্রামেরই কয়েকজন বাসিন্দার দিকে। আনন্দবাজার পত্রিকাসহ বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।

কীভাবে মেরে ফেলা হয়েছিল হাতিটিকে? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন কেরালারই বনবিভাগের এক কর্মকর্তা মোহন কৃষ্ণাণ। মোহন জানিয়েছেন, হাতিটির মুখের ভেতর বারুদে ঠাসা আনারসের বিস্ফোরণ হওয়ার পরও বোধহয় প্রাণিটি বুঝতে পারেনি যে তার সঙ্গে ঠিক কী হয়েছে। তীব্র জ্বালা-যন্ত্রনা নিয়ে এরপরও সে গোটা গ্রাম ঘুরে বেরিয়েছে। কিন্তু কারো কোনো ক্ষতি করেনি। একটা বাড়ি ভাঙেনি। কোনো লোককে আক্রমণ করেনি। অবলা প্রাণীটি সবাইকে বিশ্বাস করেছিল।

জ্বালা-যন্ত্রণা নিয়ে স্থানীয় একটি নদীতে শুঁড় আর মুখ ডুবিয়ে বসেছিল হাতিটি। ভেবেছিল, জলের ঠাণ্ডাভাব হয়তো ভিতরের জ্বালাটাকে কমাবে। আর ক্ষতস্থানে কীট-পতঙ্গের উৎপাত হবে না। আর এভাবেই পানিতে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই হাতিটির মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বন বিভাগের উদ্ধারকারী দল। চার ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেও তারা পানি থেকে তুলতে পারেনি হাতিটিকে। মোহন কৃষ্ণাণের ফেসবুক পোস্টে হাতিটির মৃত্যুর এমন বর্ণনা শুনে অনেকেই শিউরে উঠেছেন। হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়েছে অনেকের। তীব্র নিন্দা করেছেন নেটিজেনবাসী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 3 =

Back to top button