জাতীয়

মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সর্বকালের সকল রেকর্ড ভেঙেছে

করোনাভাইরাসের এই প্রকোপের মধ্যেও অসাধারণ এক সুখবর পেলো বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে বিশ্বে মাছের উৎপাদন সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে। স্বাদুপানির মাছে বাংলাদেশ তার তৃতীয় স্থানটি ধরে রেখে উৎপাদন বাড়ানোর হারে দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে। চাষের মাছে দেশ গত ছয় বছরের মতোই পঞ্চম হয়েছে।

মৎস্যসম্পদ বিষয়ক জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বৈশ্বিক প্রতিবেদন দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচারে এ তথ্য জানানো হয়।

৮ জুনে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি বলছে, গত বছর বিশ্বে প্রায় ১৮ কোটি টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। এর অর্ধেকেরও বেশি অভ্যন্তরীণ উৎসের তথা স্বাদুপানির মাছ। বাকিটা সামুদ্রিক মাছ।

২০১৮ সালে প্রকাশিত গতবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালেই স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এক লাফে পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠেছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছিল যথাক্রমে চীন ও ভারত। স্বাদুপানির মাছ বাড়ার হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় হয়েছে। এক নম্বরে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সে দেশে মাছ উৎপাদন বাড়ার হার ১২ শতাংশ, আর বাংলাদেশে এর হার ৯ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে বিশ্বে এ হার প্রায় ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ বিশ্বে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় ছিল, উৎপাদন বাড়ার হারে দ্বিতীয় হয়েছে। কৃতিত্ব ইলিশের আর দেশি মাছ চাষের।

বাংলাদেশের মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনের হার মূলত বেড়েছে ইলিশের সৌজন্যে। গত এক যুগে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে জাতীয় মাছটির উৎপাদন এখন পাঁচ লাখ টন ছাড়িয়েছে। ইলিশে এ দেশ বিশ্বে এক নম্বর। মোট ইলিশের ৮০ শতাংশই এখানে উৎপাদিত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, গবেষণা করে বিজ্ঞানীদের পরামর্শে সরকার ইলিশ রক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। গত চার বছরে উৎপাদন প্রায় দুই লাখ টন বেড়েছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীরা বিলুপ্তপ্রায় মাছের আধুনিক চাষপদ্ধতি উদ্ভাবন করছেন। সামনে আমরা সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে গুরুত্ব দেব। আশা করি, এতে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন আরো

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মৎস্যসম্পদের অবদান এখন ৪ শতাংশ। অধ্যাপক আবদুল ওহাব বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক এনজিও ওয়ার্ল্ড ফিশ-এর ইকোফিশ প্রকল্পের দলনেতা।

তিনি বলেন, নদী ও অন্যান্য জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ আছে। সমুদ্রসীমা বাড়ার পর বঙ্গোপসাগরে আহরণের সুযোগও বেড়েছে। এগুলো কাজে লাগাতে পারলে দেশ মাছ উৎপাদনে আরো এগিয়ে যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 3 =

Back to top button