রাজনীতি

মানিকে মানিক চিনে, শুয়োর চিনে কচু: ভিপি নুর

গ্রামে একটা কথা প্রচলিত আছে- মানিকে মানিক চেনে, শুয়ারে চেনে কচুখ্যাত। আফসোস! আমরা মানিক চিনতে পারলাম না! বৈশ্বিক এই বিপর্যয়ে, দেশের মানুষকে মহামারি থেকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে উদ্যম নিয়ে কাজ করেও পুরষ্কৃত করার বদলে উল্টো মিলেছে- হয়রানি, বাজে কথা, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য!

বলছি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষক ড. বিজন কুমার শীল ও তার টিমের কথা। ড. শীলের গবেষণার তাক লাগানো সাফল্যে এটিই প্রথম নয়, ১৯৯৯ দেশে যখন ছাগলের মড়কে কৃষকের মাথায় হাত। সে সময়ে কৃষককে বাঁচাতে, ছাগলের মড়ক ঠেকাতে আবিষ্কার করেন পিপিআর ভ্যাকসিন।

২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসে যখন সিঙ্গাপুর কাবু হয়ে পড়ে। তখন তিনি সার্স ভাইরাসের দ্রুত শনাক্তকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। এবার যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে সারা বিশ্ব বিপর্যস্ত। প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যখন বলেছেন সংক্রমণ থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিক সংখ্যক পরীক্ষা করে আক্রান্তদের থেকে সুস্থ মানুষকে আলাদা করা।

ড.বিজন কুমার শীল ও তার টিম দ্রুত সময়ে সার্স ভাইরাস শনাক্তকরণের মতো এবারও উদ্ভাবন করেছেন স্বল্প খরচে দ্রুততম সময়ে করোনা শনাক্তকরণ পদ্ধতির কিট। ড. শীলের সঙ্গে তার এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড.নিহাদ, ব্র্যাক বিশ্বেবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রাশেদ জমির উদ্দিন, আইসিডিডিআরের বিজ্ঞানী ড. আহসানুল হক, গণস্বাস্থ্যের ড. মুবিন এবং তাদের এ কাজের সার্বিক সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধায়ন করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড.জাফরউল্লাহ চৌধুরী।

করোনা শনাক্তকরণে যে কিটটি বর্তমানে দেশে ব্যবহার করা হয় সেটিতে খরচ পড়ে প্রায় ৪৫০০-৫০০০ টাকার মতো, রিপোর্ট পেতে সময় অনেক বেশি লাগে। প্রসেসটা ক্রিটিক্যাল ও সেন্সেটিভ হওয়ায় সব জায়গায় চাইলেই পরীক্ষা করা সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষকদের কিটে খরচ পড়বে খুবই কম ২৫০-৩০০ টাকা, সময় লাগবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট। চাইলে ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও পরীক্ষা করা সম্ভব।

কিটের সহজলভ্যতা, স্বল্প খরচ, দ্রুত সময়ে রিপোর্ট তারপরও এ কিট কেনো ব্যবহার করা যাবে না? গবেষণাটি জাফরউল্লাহ চৌধুরীর গণস্বাস্থ্যে হয়েছে বলে? দেশীয় পদ্ধতি ব্যবহার করলে বিভিন্নজনের ধান্দা বন্ধ হয়ে যাবে বলে? এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে খুব অল্প সময়ে সারা দেশে আক্রান্তের প্রকৃত চিত্র বের আসবে বলে?

দায়িত্বশীল জায়গা থেকে যারা প্রতিনিয়ত গোঁজামিল, মিথ্যাচার করেছেন, ভাঁওতাবাজিমূলক কথা-বার্তা বলেছেন জাতির সামনে তাদের আসল চেহারাটা বের হয়ে আসবে বলে? অপদার্থদের প্রলাপে কষ্ট নিবেন না শ্রদ্ধেয় ড. বিজন কুমার শীল, ড. ফিরোজ আহমেদ, ড. নিহাদ, ড. রাশেদ জমিরউদ্দিন, ড. আহসানুল হক, ড. মুবিন সর্বোপরি ড. জাফরউল্লাহ।

ওরা কথা-বার্তা, কাজে-কর্মে আপনাদের মনে কষ্ট দিলেও এদেশের কোটি মানুষ আপনাদেরকে মন থেকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিচ্ছে।

স্যালুট জানাই জাতির সূর্য সন্তানদের
ভালোবাসা অফুরন্ত…

লেখক : ভিপি, ডাকসু।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 2 =

Back to top button