আন্তর্জাতিক

মিয়ানমার অন্তত ৭০ জনকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনীঃ জাতিসংঘ

মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি থমাস অ্যান্ড্রুস বলেছেন, অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির সেনাবাহিনী অন্তত ৭০ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে। এ কর্মকাণ্ডের জন্য সেনাবাহিনীর নিন্দা জানান তিনি। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যা, নিপীড়ন ও নির্যাতনসহ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ বেড়ে চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মানবাধিকার তদন্তকারী থমাস অ্যান্ড্রুস জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বৃহস্পতিবার বলেন, ‘মিয়ানমার দেশটি খুনি ও অবৈধ শাসকদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ব্যক্তির বয়স ২৫ বছরের কম। তিনি আরও বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকে ২ হাজারেরও বেশি মানুষকে বেআইনীভাবে আটক রাখা হয়েছে এবং সহিংসতা ধীরে ধীরে বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট ভিডিও প্রমাণ রয়েছে যে নিরাপত্তা বাহিনী নিষ্ঠুরভাবে বিক্ষোভকারী, চিকিৎসাকর্মী ও পথচারীদের পেটাচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সেনাবাহিনী ও পুলিশ পদ্ধতিগতভাবে আবাসিক এলাকায় যাচ্ছে, সম্পদ ধ্বংস করছে, দোকান লুট করছে, নির্বিচারে বিক্ষোভাকারী ও পথচারীদের আটক করছে এবং মানুষজনের ঘরবাড়িতে নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে।’

সেনাবাহিনীর মালিকানায় থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং তেল ও গ্যাস প্রতিষ্ঠানসহ মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ সামরিক নেতা এবং প্রধান রাজস্বের উৎসগুলোর ওপর বহুমাত্রিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান অ্যান্ড্রুস।

এদিকে, থমাস অ্যান্ড্রুসের এই বক্তব্য প্রচারের কয়েক ঘণ্টা পরেই তা নাকচ করে দিয়েছে জান্তা সরকার। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব চ্যান আয়ে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সংযমের পরিচয় দিয়েছে।’
এছাড়া তার লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমার ভীষণ জটিল চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং নাজুক পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। এতে জোর দিয়ে বলা হয়, সামরিক নেতৃত্ব একটি উদীয়মান গণতান্ত্রিক উত্তরণ থামাতে চায় নি।

এতে আরও বলা হয়, ‘এই প্রেক্ষিতে, নিজেদের সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, জাতীয় ঐক্য ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় মিয়ানমারের প্রচেষ্টা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বুঝতে পারবে বলে মিয়ানমার প্রত্যাশা করে।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার আরও ৭ জন বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। গত ১ ফেব্রুয়ারি সূচিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এর পরপরই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা শুরু থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করে আসছে। কিন্তু জান্তা সরকার অত্যন্ত সহিংস উপায়ে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − eight =

Back to top button