ধর্ম ও জীবন

মৃত্যুর আগে পরিবারকে যেসব ওসিয়ত করে যাবেন

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলেছেন, 

كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِ

বাংলা উচ্চারণ: ‘কুল্লু নাফসিন জায়িকাতুল মাউত’ 

অর্থ: ‘প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু ‘ (সূরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৫)। 

মৃত্যুর সংবাদ দিয়ে কোরআন পাকে আল্লাহ তায়ালা এভাবে চারবার মানুষকে হুশিয়ার করেছেন। আল্লাহর হুকুমে যে মানষের সৃষ্টি সে মানুষই আবার একদিন আল্লাহর হুকুমেই বিদায় হয়ে যায়। শেষ হয়ে যায় অনেক সাধের এ জীবনলীলা।

এ জন্যে মানুষকে আগেই জানানো হয়েছে যে, জ্বীন ও মানুষজাতির সৃষ্টি একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের গোলামী করার জন্য। আল্লাহ বলেন,

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ

বাংলা উচ্চারণ: ‘ওয়ামা খালাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিয়্যাবুদু।’ 

অর্থাৎ: ‘আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা: সূরা আয-যারিয়াত, (মক্কায় অবতীর্ণ) আয়াত: ৫৬)।

মানুষের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা আর  মৃত্যুদাতা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। শুধু রাব্বুল আলামিনের দাসত্ব করা,  তাঁর দেয়া নির্দিষ্ট জীবনবিধান মেনে চলা এবং বিশ্বনবী (সা.)-কে রাসূল বা নেতা হিসেবে অনুসরণ করে মানুষ তার জীবন চালাবে এটাই ছিল আল্লাহ পাকের দাবি। তাই মানুষের জন্য এ দুনিয়া হলো পরীক্ষাকেন্দ্র। 

মূলতঃ আল্লাহর হুকুমমত চলে মরনের পরে জান্নাতবাসী হওয়াই হলো মানুষের দায়িত্ব।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা জন্ম ও মৃত্যুর কর্তা। 

কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে- তিনি জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, যাতে পরীক্ষা করেন তোমাদের মধ্যে কে সর্বোত্তম আমল করেছো।

অতএব, আমাদের মৃত্যু অবধারিত। এর থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। তবে এর আগে আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

আর তাই মৃত্যু আসার আগেই আপনার পরিবারকে যেসব বিষয়ে ওসিয়ত করে যাবেন!!

(১) মাইকে আমার মৃত্যুর খবর বলবেন না..

(২) আমার মৃত্যুর সংবাদ শুনলে পড়ুন ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন।’

(৩) আমার মৃত্যুকে অকাল মৃত্যু বলবেন না, কারণ আমি আমার নির্ধারিত রিজিক ভোগ করে ফেলেছি।

(৪) আমাকে নিয়ে বিলাপ-মাতম করবেন না কারণ এটা সুন্নাহ বিরোধী কাজ।

(৫) আমার মৃত্যুতে চল্লিশা, কুল-খানি, মিলাদ করবেন না .. কারণ এটা স্পষ্ট বিদআত।

(৬) যারা আমার মৃত্যুর খবর শুনবেন বা যারা আমার মৃত্যুর সময় থাকবেন তারা অবশ্যই আমার জানাজায় অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করবেন।

(৭) আমার লাশ মাহরাম ছাড়া  অন্য কাউকে দেখাবেন না

(৮) আমার লাশকে সুন্দরভাবে গোসল করার ব্যবস্থা করে দেবেন।
(৯) লাশ দাফনে ইসলামিক রীতিনীতি অবলম্বন করবেন…. সমাজের নয়।

(১০) আমাকে কবরস্থ করার পর কিছুক্ষণ সেখানেই থাকুন আর পড়ুন আল্লাহুম্মা সাব্বিতহু আল্লাহুম্মা সাব্বিতহু।

(১১) আমার কবরের আজাব লাঘবের জন্য ও মুনকার নাকিরের প্রশ্নের উত্তর যেন দিতে পারি সেই দোয়া করবেন আল্লাহুম্মা সাব্বিত হু আলাল ঈমান।

(১৩) আমার হয়ে দান-সাদাকা করবেন

(১৪) আমার সাদাকায়ে জারিয়া চালু থাকলে সেটার খবর নেবেন, সেগুলোকে সমুন্নত করার চেষ্টা করবেন।

(১৫) আমার পরিবারের খবর নেবেন।

(১৬) আমার মৃত্যু থেকে এই শিক্ষা নিয়ে ফিরে যাবেন… আপনার সময়ও অতি নিকটে..!!!

(১৭) আমার পাওনা আমার পরিবারকে ফিরিয়ে  দেবেন, না পারলে সাদকাহ জারিয়া করবেন আমার জন্য, তাও না পারলে আজিবন আমার জন্য দোয়া করবেন আমি ক্ষমা করে দেবো। ইনশাআল্লাহ!

(১৮)  আপনি আমার কাছে পেয়ে থাকলে আমার জীবিত অবস্থায়ই চেয়ে নেবেন আমার কাছে, আর যদি মরে যাই পরিবারের কাছে চাবেন। তারা না দিলে ক্ষমা করে দেবেন আল্লাহর জন্য। আল্লাহও আপনাকে ক্ষমা করবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + 10 =

Back to top button