চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার রায়চোঁ গ্রামের রিকশাচালক বাবার অদম্য মেধাবী মেয়ে পান্না আক্তারের মেডিকেল কলেজে ভর্তির স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান।
সংবাদ সংস্থা ইউএনবি জানায়, দরিদ্র পরিবারের শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে সুযোগ পাওয়া পান্নার চিকিৎসক হওয়া অর্থের অভাবে অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়ে মানবিক সহায়তা চেয়েছিলেন তার বাবা-মা ও শিক্ষকরা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন সাংসদ ও জেলা প্রশাসক।
হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ আহাম্মদ ও উপাধ্যক্ষ আনোয়ার উল্লাহ ইউএনবিকে জানান, জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের সাথে কথা বলে পান্নার ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দেয়ার আশ্বাস দেন। সেই সাথে রাতে সাংসদ রফিকুল মেয়েটির পড়ালেখার সব ব্যয় বহনের প্রতিশ্রুতি দেন।
রায়চোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী পান্নার বাবা দুলাল মিয়া রিকশাচালক ও মা কোহিনূর বেগম গৃহিণী। তিন বোনের মধ্যে পান্না সবার ছোট। সে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে ২০১৯ সালে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭২তম স্থান লাভ করে।
অধ্যক্ষ মাসুদ আহাম্মদ ও উপাধ্যক্ষ আনোয়ার উল্লাহ জানান, পান্না এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষাতে জিপিএ-৫ পায়। কলেজ থেকে তার উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনার সব বইপুস্তক ও অন্যান্য খরচ বহন করা হয়। সেই সাথে মেডিকেলে ভর্তির কোচিংয়ের সময়ের সম্পূর্ণ খরচ বহন করেছেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক (গণিত) বেলাল হোসেন ও তার স্ত্রী সহকারী অধ্যাপক (ব্যবস্থাপনা) বিলকিছ বেগম।
রায়চোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কুদ্দুছ বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের গ্রামের সন্তান। এক সময় আমাদের স্কুল থেকে প্রাথমিকের পাঠ শেষ করেছে। তার কৃতিত্বে আমরা আনন্দিত। কিন্তু তাদের পরিবারটি আর্থিকভাবে একেবারে অসচ্ছল। বাবা দিনমজুরের কাজ করে আবার কখনো রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। মেয়েটি যেন উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করতে পারে এ জন্য আমরা বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানাই।’
কেউ পান্নাকে সহযোগিতা করতে চাইলে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ আনোয়ার উল্লাহর ফোন নম্বরে (০১৭৬১৮২৪৪৫২) যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।