যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে তালেবানের খোলা চিঠি
আফগানিস্তানের জব্দ করা সম্পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তালেবান। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, দেশের অর্থনৈতিক অশান্তি হলে দেশ ত্যাগের ঘটনা ঘটতে পারে। এতে অন্যান্য দেশেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
বুধবার একটি খোলা চিঠিতে তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এ আহ্বান জানান। এ খবর দিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
খবরে বলা হচ্ছে, ওয়াশিংটন আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ৯.৫ বিলিয়ন সম্পদ জব্দ করেছে। আফগানের সাহায্য নির্ভর অর্থনীতি কার্যকরভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। বেসামরিক কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছে না। ট্রেজারি আমদানির জন্য অর্থ প্রদান করতে সরকার অক্ষম।
চিঠিতে মুত্তাকি বলেন, আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দাঁড়িয়েছে আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা। এই উদ্বেগের শিকড় আমেরিকান সরকার। তারা আমাদের জনগণের সম্পদ স্থগিত করে রেখেছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে দেশত্যাগের কারণ হতে পারে।
মুত্তাকি উলেখ করেন, ২০২১ ছিল ওয়াশিংটনের আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার শতবর্ষ। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও উত্থান-পতনের সম্মুখীন হয়েছে। সুশাসন, নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতার দিকে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান থেকে কোনো অঞ্চল বা বিশ্বের জন্য কোনো প্রকার হুমকি নেই এবং ইতিবাচক সহযোগিতার জন্য একটি পথ প্রশস্ত করা হয়েছে।
চিঠিতে তালেবান আরও জানিয়েছে, অর্থ আটকে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সুনামকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি নিয়েছে। এটি আমেরিকার হাতে আফগানদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ স্মৃতি হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, আমেরিকান কংগ্রেসের সদস্যরা এ নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ চিন্তা করবেন।
অবশ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আফগান জনগণের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মিলিয়ন ডলারের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার এবং নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকারের নিশ্চয়তা না পেলে তহবিল ছাড় দিতে অনিচ্ছুক।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানরা আফগানিস্তানকে কঠোরভাবে শাসন করেছিল। ইসলামিক আইনের নামে তারা অনেক ক্ষেত্রেই নৃশংসভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিল। চলতি বছরের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলের পর ৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রি পরিষদ ঘোষণা করে তালেবান। কিন্তু তিন মাস পার হলেও কোনো দেশ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।