কূটনীতিজাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হলো বেক্সিমকোর তৈরি ৬৫ লাখ পিপিই

আন্তর্জাতিক মানের পিপিই (পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বা পিপিই) তৈরি করা অল্প সংখ্যক দেশের কাতারে অন্তর্ভুক্ত হলো বাংলাদেশ।

সোমবার (২৫ মে) করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য বেক্সিমকোর তৈরি পিপিই’র প্রথম চালান পাঠানো হলো যুক্তরাষ্ট্রে।

মাত্র দু’মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত বাজারে ৬৫ লাখ পিস পিপিই গাউন তৈরি করে রফতানির কার্যাদেশ পায় বেক্সিমকো। তার প্রথম চালান নিয়ে এমিরেটস-এর একটি বিমান আজ দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

এই যাত্রার আগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার।

বেক্সিমকো থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড হেনস-এর মাধ্যমে ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেক্সিমকোর অবদানের প্রশংসা করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বের মতো আমরাও সমস্যায় পড়েছি এবং কীভাবে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া যায় সেই চেষ্টা করছি।’

তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১০ হাজার বা ২০ হাজার পিস নয়, ৬৫ লাখ পিস উন্নত মানের স্পর্শকাতর স্বাস্থ্য বিষয়ক পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের মতো নিয়ন্ত্রিত বাজারে আমরা পাঠাতে সক্ষম হচ্ছি।’

যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পিপিই পাঠানোর এটি প্রথম বড় চালান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বলেন, বাংলাদেশ বৃহৎ আকারে পিপিই বানাতে সক্ষম, এই বিষয়টিকে অভিনন্দন জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি বলেন, ‘এই দুই দেশ কীভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করতে সক্ষম, বেক্সিমকো-হেনস অংশীদারিত্ব তার বড় উদাহরণ।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাত্র দুই মাস আগে অনুরোধ এসেছে এবং এরমধ্যে বেক্সিমকো তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে আমাদের জন্য জরুরি পিপিই তৈরি করেছে। তার মন্তব্য, ‘আমলাতান্ত্রিক বা উদ্যোক্তার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি আলোর গতিতে কাজ হয়েছে।’

বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও গ্রুপ ডিরেক্টর সৈয়দ নাভেদ হুসেন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আকার ধারণ করার কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পিপিই অত্যন্ত দরকারি জিনিস। বেক্সিমকো দ্রুত তাদের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে গাউন, মাস্ক ও কভার-অলস তৈরি করছে।

বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান, ‘সারা বিশ্বে পিপিইর ঘাটতি রয়েছে এবং এ জন্য আমরা এটি প্রস্তুত করছি। আমরা এটি স্থানীয়ভাবে জোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশেও অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বাজারে রফতানি করছি।’

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ২৫টি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পণ্য বাংলাদেশ থেকে আমদানি করার প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ ১৪টি পণ্য দিতে সক্ষম বলে জানানো হয়। এরপর দুই দেশের বেসরকারি খাতের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মতো নিয়ন্ত্রিত বাজারে অর্ডার পাওয়ার পর মাত্র দুই মাসের মধ্যে ৬৫ লাখ পিস পিপিই তৈরি করে পাঠানো পোশাক খাতে বাংলাদেশের সক্ষমতাকে আরও বলিষ্ঠভাবে প্রমাণ করলো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − six =

Back to top button