প্রকৃতি ও জলবায়ূ

যেভাবে রাখা হয় ঝড়ের নাম

আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে যে মহাসাগর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার অববাহিকায় থাকা দেশগুলি তার নামকরণ করে। চলতি শতকের শুরুর দিকে এই পদ্ধতি চালু হয়। সারা পৃথিবীতে মোট ১১টি সংস্থা ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে।

যদিও কয়েক দশক আগে এসব নিয়ম ছিল না। তখন নানা ঘটনা থেকে ঝড়ের নাম ঠিক হত। কোনও ঝড়ে কোনও জাহাজ ডুবে গেলে সেই জাহাজের নামে হত ঝড়ের নাম। ২০০০ সালে ঝড়ের নামকরণের জন্য নিয়ম বানানো হয়। তাতে ওয়ার্ল্ড

মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন ও ইউনাইডেট নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়ার সদস্য দেশগুলি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। সমস্ত দেশের কাছ থেকে ঝড়ের নাম চাওয়া হয়। তার থেকে দেশ প্রতি ৮টি করে নাম বাছাই করে মোট ৬৪টি ঝড়ের নামকরণ করা হয়। সেই তালিকায় শেষ নাম ‘আম্ফান’। ২০১৮ সালে ওই আটটি দেশের সঙ্গে যোগ করা হয় আরও ৭টি দেশকে। মোট ১৩টি দেশের থেকে চাওয়া হয় নতুন নাম। দেশপিছু ১৩টি করে নাম নিয়ে তৈরি হয় ১৬৯টি ঝড়ের নামের তালিকা।

বর্তমানে চলছে আম্ফান। আম্ফান শব্দের অর্থ আসমান বা আকাশ। ২০০৪ সালে থাইল্যান্ড এ  নাম প্রস্তাব করে।  প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী আম্ফানের পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলির নাম হল, নিসর্গ (বাংলাদেশের প্রস্তাবিত), গতি (ভারতের প্রস্তাবিত), নিভার (ইরানের প্রস্তাবিত), বুরেভি (মালদ্বীপ প্রস্তাবিত), তৌকতাই (মায়ানমারের প্রস্তাবিত নাম) এবং ইয়াস (ওমান প্রস্তাবিত)।

ঝড়ের নাম বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো’র কতগুলি নির্দিষ্ট শর্ত মেনে চলা হয়। শর্তগুলি হলো-

*** ঝড়ের নামটি কোনও রকম লিঙ্গ, রাজনীতি, ধর্ম এবং সংস্কৃতি নিরপেক্ষ হওয়া চাই।

*** ঝড়ের নামটি যেন কোনও ভাবেই কোনও অনুভূতিতে আঘাত না করে।

*** ঝড়ের নামটি যেন নিষ্ঠুরতা বা আপত্তিকর কোনও বিষয় না হয়।

*** ঝড়ের নামটি যেন সংক্ষিপ্ত, সহজে উচ্চারণ করা যায়।

*** ঝড়ের নামটি অবশ্যই ৮টি বর্ণের (লেটার) মধ্যে হতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =

Back to top button