খেলাধুলাফুটবল

যে কারণে ঢাকার পরিবর্তে সিলেটে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ

ফিফা যদি ‘ক্লোজ ডোর’ ম্যাচের নির্দেশনা না দেয় তাহলে ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের খেলায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের গ্যালাারিতে যে তিল ধারণের জায়গা থাকবে না সেটা নিশ্চিত।

কেবল বাংলাদেশ-আফগানিস্তার ম্যাচই নয়, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আরও যে দুটি হোম ম্যাচ আছে তাও হবে সিলেটে। ভারত আর ওমানের বিপক্ষে ম্যাচের টিকিট নিয়েও কাড়াকাড়ি হবে। ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সময় সিলেটের মানুষ প্রমাণ দিয়েছে তাদের ফুটবল প্রেম।

তারপরও কিছু মানুষের প্রশ্ন কেন তিনটি হোম ম্যাচই হবে সিলেটে? বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচও নয় কেন? গত বছর অক্টোবরে কাতারের বিপক্ষে ম্যাচে তো প্রমাণ হয়েছে এই স্টেডিয়ামের গ্যালারিও পূরণ করে দিতে পারে দর্শক। অন্তত বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজন করা যায় না?

বাস্তবতা হলো দেশের প্রধান স্টেডিয়ামটি এ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের উপযুক্তই নয়। আন্তর্জাতিক ভেন্যুর জন্য ফিফার যে কয়টি কঠিন শর্ত থাকে তার অন্যতম গ্যালারিতে চেয়ার। যা এখন পুরোপুরি নেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।

যে কারণে অনেক আগেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করে ম্যাচগুলো সিলেটে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফুফে। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজও শুরু করে দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে চেয়ার স্থাপন করলে দর্শকধারণ ক্ষমতা কমে ১৫-১৬ হাজারে নেমে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে টিকিট নিয়ে কী কাণ্ড যে ঘটবে তা অনুমান করা কঠিন নয়। তাই বাফুফে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের তিনটি হোম ম্যাচের টিকিট ব্যাংকের মাধ্যমে বিক্রির চিন্তাভাবনা করছে।

বাংলাদেশের বাকি চার ম্যাচ ৮ অক্টোবর আফগাস্তিান, ১৩ অক্টোবর কাতার, ১২ নভেম্বর ভারত ও ১৭ নভেম্বর ওমানের বিপক্ষে। এর মধ্যে কাতারের বিপক্ষে ছাড়া বাকি তিনটি ম্যাচই সিলেটে হবে।

প্রথমে পরিকল্পনা ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি সিলেটে আয়োজন করে ভারত ও ওমানের বিপক্ষে ম্যাচ হবে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। এ সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে চেয়ার স্থাপনও করা হবে।

কিন্তু দুটি কারণে এ পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হয়েছে বাফুফেকে। কারণ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজের জন্য ১০০ কোটি টাকার মতো একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়ে আছে। ওই কর্মযজ্ঞের আগে দুটি ম্যাচের জন্য গ্যালারিতে নতুন চেয়ার স্থাপন করাটা হবে অর্থ অপচয়। তারপরও যতটুকু সম্ভাবনা ছিল তাতে বালু ঢেলেছে করোনাভাইরাস। এই মহামারির সময় এক গাদা টাকা খরচ করে গ্যালারিতে সাময়িক সময়ের জন্য চেয়ার বসানোকে অযৌক্তিক মনে করছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

তাইতো বিশ্বকাপ বাছাইয়ের বাকি তিনটি হোম ম্যাচই সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজনের সিদ্ধান্ত। এএফসির বেধে দেয়া সময়ের মধ্যেই বাফুফে তিন ম্যাচের ভেন্যুর নাম জানিয়ে দেবে।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগ বলেছেন, ‘সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের কাজ দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। আশা করি, পুরো গ্যালারিতে চেয়ার বসে যাবে। তাতে দর্শকধারণ ক্ষমতা কমবে। তাই টিকিটের ব্যাপক চাহিদা থাকবে। ঝামেলা এড়াতে আমরা তিন ম্যাচের টিকিটই ব্যাংকের মাধ্যমে বিক্রির চিন্তাভাবনা করছি।’

বাংলাদেশ চার ম্যাচ খেলে মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে রয়েছে। ঐ ১ পয়েন্ট বাংলাদেশ পেয়েছে কলকতায় ভারতের বিপক্ষে ড্র করে। ৮৮ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকে ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ। বাকি তিন ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছে আফগানিস্তান, কাতার ও ওমানের বিপক্ষে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − 5 =

Back to top button