Breakingধর্ম ও জীবন

যে চার আমল করলে যা চাইবেন তাই পাবেন!

তাসবিহ আল্লাহর পছন্দনীয় ইবাদত। চার তাসবিহ-এর আমল করলে বান্দা যা চাইবে আল্লাহ তাআলা নিশ্চিতভাবে তা-ই দেবেন। এ নিশ্চয়তা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কী সেই তাসবিহ? এ তাসবিহ-এর আমলই বা কীভাবে করতে হবে?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক আরব বেদুইনকে এ তাসবিহ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং চাহিদা মোতাবেক প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিয়েছেন। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ সুনানে বায়হাকিতে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একদিন এক আরব বেদুইন এসে বললেন- হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে (যে কোনো) একটি ভালো আমল শিখিয়ে দিন-
তখন এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই বেদুইনের হাত ধরলেন। আর তাকে (সামনে বসিয়ে) এ শব্দগুলো শেখালেন এবং বললেন এ শব্দগুলো (৪ তাসবিহ) বেশি বেশি পড়বে-
> سُبْحَانَ الله : সুবহানাল্লাহ; আল্লাহ পবিত্র
> اَلْحَمْدُ للهِ : আলহামদুলিল্লাহ; সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য
> لَا اِلَهَ اِلَّا الله : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ; আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই
> اَللهُ اَكْبَر : আল্লাহু আকবার; আল্লাহ তাআলাই মহান (সবচেয়ে বড়)।

লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত এ কথাগুলো শুনে কোনো কিছু না বলে ওঠে চলে গেলেন। (অর্থাৎ এ আমলটির ব্যাপারে তার আগ্রহ বাড়েনি)

তারপরের ঘটনা…
লোকটি কি যেন চিন্তা করছে। লোকটি সেখান থেকে ওঠে কিছুদূর যাওয়ার পর আবারও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ফিরে আসে। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তাঁকে দেখে) মুচকি হাসলেন।
লোকটি ফিরে এসে প্রিয়নবির সামনে বসে বললেন-
(হে আল্লাহর রাসুল!) ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার’- আপনি যে এ তাসবিহগুলো আমাকে শেখালেন, এ বাক্যগুলো তো আল্লাহর জন্য।
এতে আমার জন্য কী রয়েছে? এগুলো পড়লে আমি কী পাবো?

এবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন-
> তুমি যখন বলবে- ‘সুবহানাল্লাহ’;
আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।
> তুমি যখন বলবে- ‘আলহামদুলিল্লাহ’;
আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।
> তুমি যখন বলবে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’;
আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।
> তুমি যখন বলবে- ‘আল্লাহু আকবার।
আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।

তারপর…
জিকিরকারী ব্যক্তি আল্লাহর কাছে নিজের (কাঙিক্ষত) চাহিদাগুলো (ধারাবাহিকভাবে যা চাইবে) তুলে ধরবে (যেমন)-
> বান্দা বলবে- (اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِىْ) আল্লাহুম্মাগফিরলি, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দিন।
>> তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।

> বান্দা বলবে- (اَللَّهُمَّ ارْزُقْنِىْ) ‘আল্লাহুম্মার জুক্বনি’ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে রিজিক দান করুন।
>> তখন আল্লাহ বলবেন, তোমাকে ইতিমধ্যে রিজিক দান করেছি।’

> বান্দা বলবে- (اَللَّهُمَّ ارْحَمْنِىْ) আল্লাহুম্মার হামনি’ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে অনুগ্রহ করুন।
>> তখন আল্লাহ বলবেন, ইতিমধ্যে তোমার প্রতি রহম করেছি।

এ ৪টি তাসবিহ পড়ার পর বান্দা এভাবে আল্লাহ তাআলার কাছে যা চাইবে; আল্লাহ তাআলা বান্দাকে অচিরেই তা দান করবেন বলেই আরব বেদুইনকে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি।

শুধু তা-ই নয়, এ মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের সময় আল্লাহর কাছে এ তাসবিহ পড়ে রোনাজারির সঙ্গে তা থেকে মুক্তি চাইলে আল্লাহ তাআলা বান্দার সে আবেদনেও সাড়া দেবেন। যা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিস দ্বারাই প্রমাণিত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত ৪ তাসবিহ-এর আমল করার তাওফিক দান করুন। তাসবিহগুলো বেশি বেশি পড়ার পর আল্লাহর কাছে কাঙ্ক্ষিত হালাল জিনিস প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + 8 =

Back to top button