বিবিধ

যে ভাইরাস মানুষের জন্য উপকারী

মানুষ যখন করোনাভাইরাসের খপ্পর থেকে মুক্ত হবার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তখন যেচে খাদ্যপণ্যের মধ্যে ভাইরাসের প্রয়োগ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন গবেষকরা। উপকারী এ ভাইরাস নাকি খাদ্যপণ্য আর নিরাপদ করে তুলবে।

নেদারল্যান্ডসের ভাখেনিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া শায়েস্তা করতে আরও ছোট জীবাণু কাজে লাগানোর লক্ষ্যে গবেষণা চলছে। মিকেরোস কোম্পানি ব্যাকটেরিয়ার ফেজ তৈরি করে। ফেজ আসলে এমন ভাইরাস, যেগুলো নির্দিষ্ট গোত্রের ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে বাসা বেঁধে বংশবৃদ্ধি ঘটায়। একজন পনির প্রস্তুতকারক এমন ফেজ কাজে লাগিয়ে তার উৎপাদিত পনির আরও নিরাপদ করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করাচ্ছেন।

তরল ব্যাকটেরিয়া কালচারে ফেজ সৃষ্টি করা হয়। সেখানে দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটে। হবহু সেই ব্যাকটেরিয়ার মধ্যেই ফেজ সৃষ্টি করা হয়, পরে যেগুলোর মোকাবিলা করতে হবে। ফেজ ব্যাকটেরিয়ার জাতশত্রু। ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে তার মধ্যে নিজের ডিএনএ ঢুকিয়ে দেয়। ফলে ব্যাকটেরিয়াকে বাধ্য হয়ে ফেজের অসংখ্য নকল সৃষ্টি করতে হয়। সেই ফেজগুলোর চাপে ব্যাকটেরিয়া ফেটে যায়। তখন ফেজ বেরিয়ে এসে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার ওপর হামলা চালায়।

এ পরীক্ষায় খাদ্যপণ্যের দুটি সংস্করণ ব্যাকটেরিয়া দিয়ে দূষিত করা হয়েছে। একটি খাদ্যপণ্যের ওপর পানি স্প্রে করে দেখা হল। অন্যটির ওপর ব্যাকটেরিয়ার ফেজ ঢেলে দেয়া হল। বিশেষজ্ঞরা সেই খাদ্যপণ্যের নমুনা ব্যাকটেরিয়ার জন্য অত্যন্ত উর্বর এক পাত্রে রাখলেন। তারপর সেটি ২৪ ঘণ্টার জন্য ইনকুবেটরে রাখা হল। বিজ্ঞানী দলের প্রধান হাখেনস তার ফেজগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে আশাবাদী।

তিনি বলেন, ‘এত সুনির্দিষ্ট প্রভাব ফেলে বলে ফেজ খুবই কার্যকর। অর্থাৎ এগুলো শুধু নির্দিষ্ট এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে। পনির ও দইয়ের মতো খাদ্যপণ্যের মধ্যে ভালো ব্যাকটেরিয়ার ওপর হামলা চালায় না। সে কারণে নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে ফেজ কাজে লাগানো যায়।’

২৪ ঘণ্টা পর ইনকুবেটর থেকে প্লেটগুলো বের করে নেয়া হল। তার মধ্যে অনেকগুলো অনিয়ন্ত্রিত ব্যাকটেরিয়ার কলোনি রয়েছে। কয়েকটি মাত্র ফেজের প্লেটের ওপর রাখা হয়েছে। স্টেফেন হাখেনস বলেন, ‘অনিয়ন্ত্রিত শ্রেণির তুলনায় সেগুলোর সংখ্যা দশগুণ কম। দশগুণ বেশি ফেজের প্রয়োজন হলে দশগুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া সরিয়ে ফেলা যায়। নব্বই শতাংশ ব্যাকটেরিয়া সরিয়ে ফেললে ঝুঁকি আরও কমে যায় এবং খাদ্যপণ্য আরও নিরাপদ হয়ে ওঠে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × two =

Back to top button