Lead Newsজাতীয়

রেলের টিকিট কিনতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে

বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনের টিকিট কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে। নতুন এ নিয়ম চালু হলে একজনের নামে কেনা টিকিটে অন্যজন ভ্রমণ করতে পারবেন না। টিকিট কালোবাজারি বন্ধে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ পদ্ধতিতে যাত্রীকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেলওয়ে ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করার পর যাত্রীর তথ্য রেলের সার্ভারে চলে যাবে। এর ফলে যাত্রীর ভ্রমণের সময় তার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে যাত্রীকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেলওয়ে ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করার পর যাত্রীর তথ্য রেলের সার্ভারে চলে যাবে। এর ফলে যাত্রীর ভ্রমণের সময় তার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে যারা সঠিক জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধিত রয়েছেন, তারাই এখানে যুক্ত হবেন, বাকিরা বাদ হয়ে যাবেন।’

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর বলেন, ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ নামে নতুন এই পদ্ধতি চালু হলে স্ট্যান্ডিং টিকিট বা সিট ছাড়া কোনো টিকিট বিক্রি হবে না।’

তিনি বলেন, নিবন্ধিত যাত্রী নিজের নামে বা ভ্রমণসঙ্গীদের নামে চারটি পর্যন্ত টিকিট কাটতে পারবেন। যিনি টিকিট কাটবেন বা যার নামে কাটা হবে তার উপস্থিতিতেই রেল ভ্রমণ সম্ভব হবে, কারণ টিকিট চেকারের কাছে একটি স্মার্টফোন বা ট্যাব থাকবে। সেই ডিভাইস থেকে রেলের সার্ভারে থাকা যাত্রীর পরিচয়ের সঙ্গে টিকিটে থাকা পরিচয় মিলিয়ে দেখবেন, যদি না মেলে তাহলে যাত্রা বাতিল হবে।

মাহবুব কবীর বলেন, এজন্য যাত্রীদের স্মার্টফোন বা জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে না। যেসব যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই বা ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকিট কাটার প্রক্রিয়ার বিষয়ে মাহবুব কবীর বলেন, ১৬ থেকে ১৭ বয়স বয়সীদের এখন জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে, ফলে তারা টিকিট কাটতে পারবেন।

১৬ বছরের নিচের যাত্রীদের কী হবে?

১৬ বছরের নিচে যাত্রীদের ক্ষেত্রে তার মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে টিকিট বিক্রির একটি প্রক্রিয়া পরিকল্পনায় রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব।

আগামীতে কাউন্টারে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে রেলওয়ের।

মাহবুব কবির বলেন, “আমাদের এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত রেলের টিকিট সব অনলাইনে হবে, কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হবে না।”

নতুন নিয়ম কবে চালু হবে?

কবে নাগাদ নতুন নিয়মে টিকিট বিক্রি শুরু হবে জানতে চাইলে রেলের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার উদ্যোগ নিয়েছি, এ চুক্তি হলেই শুরু করা যাবে।”

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ভাণ্ডারের দায়িত্বে রয়েছে ইসি। যে কোনো সংস্থা সেই তথ্য ভাণ্ডারের তথ্য ব্যবহার করতে চাইলে তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়। সেজন্য অর্থও পায় ইসি।

নতুন নিয়মে টিকিট বিক্রিতে রেলের প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির বিষয়ে রেল মহাপরিচালক বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি চলছে, এজন্য আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছি।”

রেলওয়ের অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম পরিচালনার দায়িত্ব থাকা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএস) ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “রেলের অনলাইনে টিকিট ক্রয় করতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র বা বা জন্ম নিবন্ধন সনদ তথ্য দিতে হয়, কিন্তু তা সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে টিকিট কালোবাজারী রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।”

জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার ও নিবন্ধনকালে তা যাচাই ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করলে টিকিট কালোবাজারি বন্ধে কার্যকর সহায়ক হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 + 20 =

Back to top button