লাশ কাঁধে ২২ কিলোমিটার, মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন সেনাবাহিনীর
দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ কাঁধে বয়ে এক কুলির মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
পিথোরগড়ের বাসিন্দা ৩০ বছরের ভূপেন্দ্র রাণা পাহাড়ি এলাকায় আইটিবিপির জওয়ানদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়ার কাজ করতেন। গত ২৮ আগস্ট সেই কাজ করতে গিয়ে বুগদিয়ার আউটপোস্টে যাওয়ার পথে বিরাট এক ধসের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পাহাড়ের উচ্চতায় প্রাণ গেলেও শেষবারের জন্য লাশ ফিরে পেতে চেয়েছিল পরিবার। মূলত খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারে করে লাশ আনাও সম্ভব হচ্ছিল না। তাই নিরুপায় হয়ে এগিয়ে এলেন আইটিবিপির সাত কর্মী। তারা ভূপেন্দ্রর লাশ কাঁধে করে ২২ কিলোমিটারের খাঁড়া পাহাড়ি পথ বেয়ে পরিবারের হাতে তুলে দিলেন।
স্ত্রী ও তিন সন্তানকে রেখে গিয়েছেন ভূপেন্দ্র। তার বন্ধুরা এই মৃত্যুর খবর জানান পরিবারকে। কিন্তু দুর্গম রাস্তা ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে লাশ বাড়ি নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
পিথোরগড়ের জেলাশাসক বিজয় কুমার যোগদান্ডে জানিয়েছেন, রাণার বন্ধুরা জেলা প্রশাসনকে একটি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আবহাওয়ার কারণে তাতে অনুমতি মেলেনি। তাই আমরা আইটিবিপির সাতজন কর্মীকে নিযুক্ত করি লাশ নিয়ে আসার জন্য। মুন্সিয়ারী থেকে বুগদিয়ার পর্যন্ত কাঁধে করে লাশ নিয়ে আসেন তারা।
রাণার মৃত্যুর একদিন পর অর্থাৎ গত ২৯ আগস্ট যাত্রা শুরু করেন তারা। প্রথম দিন সাতজন আইটিবিপি জওয়ান ২২ কিমি পথ পেরিয়ে লিলাম গ্রামে পৌঁছন। সেখানে রাত কাটান তারা। পরদিন আইটিবিপির জিপে করে মুন্সিয়ারী পৌঁছনোর পর পিথোরগড়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ভূপেন্দ্রর লাশ।