Lead Newsপ্যারেন্টিং

সন্তানকে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তোলার কুড়িটি নির্দেশনা

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্তান হলো বিরাট নিয়ামত ও আমানত। তাই সন্তানকে সৎ, আদর্শবান ও উত্তম চরিত্রে চরিত্রবান করে গড়ে তোলার দায়িত্ব সর্ব প্রথম পিতা-মাতার ওপর। পিতা-মাতা যদি এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে বা আমানতের খেয়ানত করে, তবে মহান আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

আজকের যারা শিশু তারাই আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালক, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল এবং দেশের সুনাগরিক। তাই তাদের যথাযথভাবে গড়ে তোলার উপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই আদর্শ সন্তান গঠনে নিন্মোক্ত বিষয় সমূহ খেয়াল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

১) আদর্শ সন্তানের জন্য পিতা-মাতার সৎ ও আদর্শবান হওয়া অপরিহার্য।
২) সন্তানদের জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা।
৩) শিশুদের ভূত-প্রেত ও চোর-ডাকাত ইত্যাদির কথা বলে ভয় না দেখানো।
৪) শিশুদের অন্যদের সামনে অপমান বা হেয় প্রতিপন্ন না করা।
৫) খারাপ বা অপ্রীতিকর শব্দ ব্যবহার করে তাকে সম্বোধন না করা। যেমন, নির্বোধ, অপদার্থ, গাধা, গরু, ছাগল ইত্যাদি।
৬) কোন ক্ষেত্রে ভুল হলে নম্র ও ভদ্রভাবে ভুল সংশোধন করা (বিশেষ করে প্রথম বার)
৭) সন্তানদের সাথে সমতা রক্ষা করা (স্নেহ, ভালবাসা বা কোন কিছু দেয়া..ইত্যাদি ক্ষেত্রে)
৮) দশ বছর বয়স হলে তাদেরকে আলাদা বিছানায় রাখা।
৯) তাদের নিকট দাম্পত্য জীবনের বিষয়াদি গোপন রাখা (সন্তান ছোট হলেও)
১০) শিশুদের সামনে মায়ের পাতলা, টাইট বা এমন পোশাক পরিধান না করা যাতে তার গোপনাঙ্গ সমূহ ফুটে উঠে।
১২) শিশুদের অশ্লীল, নোংরা ছবি বা ফিল্ম দেখা কিংবা খারাপ গল্প, উপন্যাস ম্যাগাজিন ইত্যাদি পড়ার সুযোগ না দেওয়া।
১৩) সাত বছর বয়স পূর্ণ হলে নামাযের আদেশ দেওয়া এবং দশ বছর বয়স থেকে নামাজ না পড়লে হালকাভাবে প্রহার করা।
১৪) সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা, অন্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অসহায়কে সাহায্য করা, মেহমানকে সম্মান করা ইত্যাদি উত্তম চরিত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া।
১৫) মিথ্যা, গালাগালি, নোংরা ও নিচু মানের শব্দ ব্যবহার না করতে অভ্যস্ত করা।
১৬) বাল্যবয়সে তাদের ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানসম্পন্ন করা। যেমন, ঈমান ও ইসলামের রোকনগুলো, আল্লাহর ভয়, পাঁচ ওয়াক্ত সলাত, কোরআন পড়া, প্রয়োজনীয় দোয়া ও জিকির সমূহ ইত্যাদি। পাশাপাশি বিশুদ্ধ আকিদা নির্ভর দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।
১৭) অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। যেমন, পিতা-মাত, ভাই-বোন, প্রতিবেশী, শিক্ষক, ক্লাসমেট, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ইত্যাদি।
১৮) সামাজিকতা শিক্ষা দেওয়া। যেমন, সালাম দেওয়া, বৈঠকে বসার ভদ্রতা, মানুষের সাথে কথা বলার ভদ্রতা, কারও বাড়িতে প্রবেশের আগে অনুমতি ইত্যাদি।
১৯) কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ইত্যাদি টেকনোলোজি ব্যবহারের আদব শিক্ষা দেওয়া এবং এগুলোর অন্যায় ব্যবহারের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা।
২০) সর্বদা ভয়-ভীতি প্রদর্শন না করে তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা যাতে তারা তাদের যেকোনো সমস্যা পিতা-মাতাকে বলতে পারে।

আমরা মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি, তিনি যেন, প্রত্যেক পিতা-মাতাকে সঠিকভাবে তাদের সন্তান-সন্ততি প্রতিপালনের তাওফিক দান করেন। যারা হবে পিতা-মাতার জন্য চক্ষু শিতলকারী, দেশ ও সমাজের জন্য উপকারী এবং পরকালে পিতা-মাতার নাজাতের ওসীলা।
আল্লাহই তাওফিক দানকারী।

আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।। দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 6 =

Back to top button