রাজনীতি

সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠিত হবেঃ আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। কারণ ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইন করা সম্ভব নয়। তবে সার্চ কমিটি আইনের কাছাকাছি। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও বলেন, “হয়তো বা সার্চ কমিটি গেজেটেড। কিন্তু এটা আইন নয়। সবার সম্মতিতে রাষ্ট্রপতি এটা করেছেন। এটা আইনের কাছাকাছি। কারণ, এটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই গেছে। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন করেছে, করে যাবে। তাদের (বিএনপি) কমিশন নিয়ে ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কমিশন গঠনের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলের কাছে সম্ভাব্য নাম আহ্বান করেন রাষ্ট্রপতি। তাদের প্রস্তাবিত থেকে কমিশন গঠন করা হয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। এ কমিশনে তাদের (বিএনপি) একজন আছেন। এক্ষেত্রে আমি বলছি, আগামী দিনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আমার কথায় তারা আশ্বস্ত হবেন কি না, তা আমি জানি না।”

আইনমন্ত্রী আনিসুল বলেন, “আইনটি করা প্রয়োজন। তবে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে দ্রুত আইন করা সম্ভব নয়। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা গুরুত্বপূর্ণ আইনটি পাশ করতে পারব। এখন আইন করা সম্ভব নয়।”

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও জানান, “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে তদন্ত কমিশন গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারি দেখা দেয়। এ নিয়ে ব্যস্ত থেকে কোভিড মোকাবিলা না করলে সেটা বোধহয় বিবেচকের কাজ হতো না। তদন্ত কমিশনের অবকাঠামো কী হবে, কোন আইনের আওতায় থাকবে বা নতুন কোনো আইনের প্রয়োজন হবে কি না, পরিধি কেমন হবে-এগুলোর খসড়া তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তদন্তের আওতাধীন বিষয় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, যারা ষড়যন্ত্রের মধ্যে ছিলেন, তারা অনেক অপরাধের সঙ্গেও জড়িত। শুধু হত্যার অপরাধের সঙ্গে তারা জড়িত নয়। এ ঘটনার পর তারা বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তন বা বিকৃত করার অপরাধ করেছেন। এ অপরাধের যাতে বিচার না হয়, সেই আইন করার অপরাধও তারা করেছেন। এজন্য নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের ইতিহাস সঠিকভাবে জানানো প্রয়োজন।”

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “এ কমিশন কোনো প্রতিহিংসামূলক নয়। এ কমিশন হচ্ছে-বিকৃত ইতিহাসকে ফেলে দিয়ে সত্য ইতিহাস সঠিক পথে চালিত করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সেটা সম্পর্কে জানানো। এটার পরিধিগত ব্যাপার আছে, গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ব্যক্তিদের নিয়ে এটা করা উচিত।”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ‘অপব্যবহার’ যাতে না হয়, সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী। এ আইনে সাংবাদিক হয়রানির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে কোনো সাংবাদিক যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হয়রানি হলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষেত্রে পুলিশের বিশেষ সেলের সুপারিশ নেওয়ার পদক্ষেপটি জোরদার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে মামলার রায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিচারাধীন বিষয় বলে এড়িয়ে যান আইনমন্ত্রী। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × three =

Back to top button