বাড়তি চিন্তার দরকার নেই। বেশি খুঁটিয়ে দেখারও প্রয়োজন নেই। ছোট্ট পরিসংখ্যানই বলে দেবে রোহিত শর্মা হলেন ওয়ানডের সত্যিকারের সেঞ্চুরিয়ান। রোহিত পঞ্চাশে পা রাখা মানেই সেঞ্চুরির হাতছানি। আর শতরান করার পর তার চেহারা আরও যায় পাল্টে।
তখন ডাবল সেঞ্চুরি আর দেড়শর দিকে উদভ্রান্তের মত ছুটে চলা। আর তাই সোয়া দুইশ ওয়ানডের ভেতরে ২৯ শতকের পাশে অর্ধশতক ৩৯টি। শতরানগুলোও অনেক বড় বড়। তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি আছে। দেড়শর ওপরেও আছে মোট ৮টি।
সেঞ্চুরি করার পর কী হয় রোহিতের? তার ভেতরে কি কোন অশরীরী আত্মা ভর করে? ভূত-প্রেতের আসর হয়? না হলে পঞ্চাশে পা রেখেই অমন শতকের দিকে বারবার ছুটে যাওয়া কীভাবে? এর পেছনের রহস্যটা কী?
শুক্রবার রাতে ফেসবুক লাইভে তামিম ইকবালও রসিকতার সুরে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ‘আচ্ছা রোহিত ভাই, সেঞ্চুরি করার পর আপনার কী হয়? আপনার ওপর কোন ভূত-প্রেত ভর করে? না হয় আপনি সেঞ্চুরি করলেই অত বড় বড় ইনিংস খেলেন কী করে?’
রোহিত শর্মার অনেক সাজানো গোছানো জবাব, ‘আসলে আমাদের কথোপকথনের শুরুতেই বলেছি আমি ইনিংস শুরুর দিকে নার্ভাস থাকি। তবে যখন সেঞ্চুরি করে ফেলি, তখন নার্ভাসনেস কোথায় পালিয়ে যায়! তার বদলে সাহস সঞ্চারিত হয়। অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস আসে, কোন ভয় থাকে না। পুরো বিষয়টা আমার কাছে অনেক বেশি উপভোগ্য হয়ে ওঠে। আমি সেঞ্চুরির মুহূর্তটাকে খুব উপভোগ করি। আমি ভাবি এখন সময়টা আমার, খেলা এখন আমার হাতে।’
বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান যেমন শতরানের পরপরই আবেগতাড়িৎ হয়ে উচ্চভিলাষী শট খেলতে শুরু করেন, রোহিত তা করেন না। বরং নিজেকে সামলে নিয়ে নিজের মতই খেলতে থাকেন। শতরানের পর অযথা তাড়াহুড়ো করে বিগ হিট নেয়ার চেষ্টা করেন খুব কম। সেটার পেছনেও আছে একটা কারণ।
তা জানিয়ে রোহিত বলেন, ‘বেশিরভাগ সেঞ্চুরির পর আমি পেছন ফিরে তাকাই। যেসব ম্যাচে ভাল খেলিনি, ভাল কিংবা খারাপ বলে আউট হয়েছি, ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছি- সেসব খেলার কথা ভাবতে থাকি। তখন নিজেকে এভাবে তৈরি করি, আজ আমার ভাল দিন। আমার চিন্তা জাগে এখন আমার কাজ করার পালা, আমি ওয়েল সেট। আমি যা খুশি করতে চাই। আমি ভাবতে থাকি অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে ফেলেছি। এখন যদি নিজে ভুল না করি, তাহলে থেকে আউট হবো না। এভাবেই নিজের সঙ্গে কথা বলি।’
খুব ভাল বলে ফিরে গেলে ভিন্ন কথা। কিন্তু নিজে থেকে সেঞ্চুরির পরপরই আউট হবার প্রবণতা বা রেকর্ড খুব কম রোহিতের। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রোহিত জানান, ‘আমি তখনও ভাবি না যে আমাকে এখনই অলআউট অ্যাটাকে যেতে হবে বা এখন সব বলকেই মারতে হবে। আমি নিজেকে তৈরি করি আমাকে আরও সময় উইকেটে থাকতে হবে।’
‘তবে হ্যাঁ ৪২-৪৩ ওভার পর্যন্ত যদি উইকেটে থাকতে পারি, তখন মনে হয় এখন সব বল মারাই একমাত্র কাজ। চল্লিশ ওভার পর্যন্ত আমি ন্যাচারাল খেলা খেলি। মারার বল পেলেই শুধু মারি। তবে ৪০ ওভারের পর থেকে আমি উড়িয়ে মারতে চেষ্টা করি। তবে এখানেও একটা কথা আছে। আমার সাথে কোন টেইলএন্ডার থাকলে একটু বুঝে খেলি। আর কোন মিডলঅর্ডার থাকলে একদম চালাতে থাকি। চান্সটা আগে থেকে নেই।’