মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের পর বাংলাদেশ দলের ব্যাটনটা থাকবে কাদের হাতে? ক্রিকেট নিয়ে আলোচনায় ইদানীং এই প্রশ্ন এসে যায় নিয়মিত। উত্তরে সৌম্য সরকার, লিটন দাসদের মতো প্রতিভাবানদের নাম আসে। কিন্তু জাতীয় দলে কারো পাঁচ বছর বা কারো এর বেশি সময়ে যে পারফরম্যান্স, সেটা আশার সঙ্গে শঙ্কার দোলাচলও তৈরি করে মনে।
এ প্রসঙ্গে দেশের ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলের প্রশ্ন, সাকিব-তামিমদের ব্যাটন নেওয়ার বিষয়ে সৌম্য-লিটনরা আসলে কতটা অবগত।
‘ওরা তো (সৌম্য-লিটন) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে অনেক দিন। সেই ২০১৪-১৫ থেকে। তাদের মধ্যে পটেনশিয়াল আছে বলে জাতীয় দলে খেলছে। ওরা কী জানে ওরা পরবর্তী সাকিব, পরবর্তী মুশফিক বা পরবর্তী মাহমুদউল্লাহ? এটা ওদেরকে আগে জানতে হবে। যে হ্যাঁ আমরা পরবর্তীতে এই রোলটা প্লে করব।’ সম্প্রতি একটি ইউটিউভ লাইভ অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়া থেকে এভাবেই বলেন বুলবুল।
বর্তমানে আইসিসিতে ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত বুলবুল বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘একটা খেলোয়াড় যখন তৈরি হতে থাকে বা পাইপ লাইনে থাকে বা পারফর্ম করতে থাকে, তাদের কিন্তু বলে দেওয়া হয় যে ইউ আর ব্যকিং হিম। এরপর তুমি আসবে। এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা তাদের (সৌম্য-লিটন) কাছে শেয়ার করা হয়েছে কিনা আমি জানি না।’
টিম ম্যানেজমেন্টের এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা দেখছেন বুলবুল, ‘একেকটা খেলোয়াড়ের শক্তির জায়গাটা যারা তাদের নির্বাচন করে বা কোচিং করে, তাদের জানা উচিত। আমরা কিন্তু সুপার হিউম্যান না যে একটা খেলোয়াড় সব ফরম্যাটে ভালো খেলবে। সবাই কিন্তু বিরাট কোহলি বা ধোনি না।’
‘সৌম্য সরকার বা লিটন দাসকে আমার মনে হয়েছে তারা টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডের জন্য খুবই ভালো ক্রিকেটার। কিন্তু টেস্টের জন্য না। টেস্ট ক্রিকেটার হতে গেলে তাদের কি করা উচিত, সেটা তাদের জানা দরকার।’
ক্রিকেটারদের নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনাহীনতারও অভাব দেখেন বুলবুল। বলছিলেন, ‘মাঝে মাঝেই আমরা গুলিয়ে ফেলছি…। সৌম্য হাইলি ট্যালেন্টেড ক্রিকেটার। কিন্তু তাকে আমরা কতভাবে ব্যবহার করেছি। কয়েক দিন আগে শান্ত (নাজমুল হোসেন শান্ত), কোন সন্দেহ নেই প্রতিভাবান ক্রিকেটার। কিন্তু দেখা গেছে সব ফরম্যাটে তাকে আমরা খেলাচ্ছি।’
‘কোন খেলোয়াড়টা কোন ফরম্যাটের জন্য সত্যিকার অর্থে ফিট, কোন খেলোয়াড় কোথায় কত দূর যেতে পারবে, তাকে সিলেকশন করার সময়, বা আমরা যারা কাজ করছি তাদের সাথে, আমাদের এই বিষয়টা জানা উচিত। এরপর তাদের সাথে ওই ভাবে কাজ করা উচিত। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়কে মানসিকভাবে বলে দেওয়া উচিত- তুমি এই, তুমি এই জায়গায় গেলে এই কাজটা করতে পারবে।’- বলেন বুলবুল।
তিন ফরম্যাটেই ভালো ফলাফলে ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটের জন্য কিছু নির্দিষ্ট খেলোয়াড় দরকার বলে মনে করেন দেশের অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরির ইতিহাস গড়া বুলবুল। সূত্র দেশ রূপান্তর