জাতীয়

হাত গুটিয়ে বসে না থেকে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই কাজ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলা একটি যুদ্ধাবস্থা। এ যুদ্ধ একটি জীবাণুর বিরুদ্ধে। সুতরাং এই সময়ে আমরা সবাই হাত গুটিয়ে বসে থাকবো, সেটি যেমন সমীচিন নয়, সেইসাথে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই কাজ করতে হবে।’

বুধবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীতে বাংলাদেশ সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের দপ্তরপ্রধানদের সাথে সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সাথে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। তথ্যসচিব কামরুন নাহার ও প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে পৃথিবীর কোনো দেশ এটি থেকে মুক্ত থাকেনি। শুধু তাই নয়, ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হারও অনেক বেশি- বেলজিয়ামে ১৬, যুক্তরাজ্যে ১৪.০২, আমেরিকায় ৫.৮, ভারতে প্রায় ৩, পাকিস্তানে ২.১২ শতাংশের বেশি, সেখানে বাংলাদেশে ১.৩৫ শতাংশ।

আমরা যদি মোকাবিলা সঠিকভাবে করতে না পারতাম, তাহলে মৃত্যুর হার অন্তত ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে বেশি হতো। আর মনে রাখতে হবে, এটি একটি খেটে খাওয়া মানুষের দেশ, এখানে জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয় রাখতে হয়। প্রায় আড়াই মাস সবকিছু বন্ধ থাকলেও সরকারের প্রাণান্ত প্রচেষ্টা ও সৃষ্টিকর্তার দয়ায় একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি। কিন্তু মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষার তাগিদেই সীমিত আকারে অনেক কিছু খোলা হয়েছে।’

‘শুধু আমাদের দেশে কার্যক্রম খোলা হয়েছে তা নয়, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগালসহ ইউরোপে প্রায় ১০-১২ দিন আগে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে, পাকিস্তানে অনেক আগেই সবকিছু খোলা হয়েছে, ভারতে আমাদের অন্তত দশদিন আগে গণপরিবহন সীমিত আকারে চালু হয়েছে’ উল্লেখ করেন ড. হাছান।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনগণকে সেবাদান চলমান রয়েছে জানিয়ে এসময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি অফিস-আদালত সীমিত আকারে খুললেও এখানে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জনগণের জন্য কাজ চলছে, কেউ অফিসে না এলে বাসায় থেকেও কিন্তু কাজ করছেন। সুতরাং জনগণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় সেটি করা হচ্ছে।’

জেলা-উপজেলাসহ মাঠ প্রশাসন একদিনের জন্যও বসেছিল না জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছেলে-মেয়ে যেখানে বাবা-মায়ের লাশ ধরেনি, সেখানে উপজেলা প্রশাসন আর পুলিশ গিয়ে সেই লাশ সৎকার করেছে, জানাজাও তারা করেছে।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন বলেছেন- সরকার না কি করোনাভাইরাসের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে পারেনি, মোকাবিলা করতে পারেনি। আমি তার প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, তিনি যদি বলতেন সমগ্র বিশ্বই করোনাভাইরাসের হাত থেকে মানবজাতিকে মুক্ত রাখতে পারেনি, তাহলে তা যথার্থ হতো। কারণ পৃথিবীর সব দেশেই করোনাভাইরাস গেছে, শুধু বাংলাদেশে নয়।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এনিয়ে গতকালও মন্তব্য করতে চাইনি, তবুও প্রশ্ন এসেছে বলে বলতে হচ্ছে, সেখানে একজন কৃষ্ণাঙ্গকে যেভাবে পুলিশি হেফাজতে হত্যার শিকার হয়েছেন, সেটি আসলে বিশ্বকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, সেখানে মানবাধিকারের কি করুণ পরিস্থিতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, রিপোর্ট পেশ করে, অনেকেই বলছেন, অন্য দেশ নিয়ে রিপোর্ট পেশ বা কথা বলার আগে তাদের নিজের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন প্রয়োজন।’

দপ্তরপ্রধানদের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক হোসনে আরা তালুকদার, বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়াসহ ১৪টি দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় যোগ দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 3 =

Back to top button