বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের আগে কোনো নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন হবে না।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, “১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটাকে বাদ দিয়েছেন। শুধুমাত্র আজীবন আওয়ামী লীগ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য। যেই নির্বাচনে আগের রাতে ভোটকেন্দ্র দখল করা হবে।”
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই বাংলাদেশে আর সেরকম নির্বাচন হবে না। নির্বাচন কমিশন গঠন হবে ঠিক যখন সত্যিকার অর্থে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যবস্থা করা হবে। সেই কমিশনের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। আর তার আগে অবশ্যই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি রাখা নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। আর ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। তার আগে কোনো নির্বাচন হবে না।”
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়ে গেছে। দুর্ভাগ্য আমাদের, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের যে ব্যবস্থা, সেই ব্যবস্থাকে আমরা এখন পর্যন্ত সুনিশ্চিত করতে পারিনি। কার জন্য পারিনি? আওয়ামী লীগের জন্য পারিনি। কারণ এই সরকার চায় দেশে একটিমাত্র দল থাকবে, একটিমাত্র পরিবার থাকবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে এদেশের মানুষ একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিল। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংসদে সেটা পাশ করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার কিছুদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। ফলে তারা চিন্তা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আমরা কোনোদিন ক্ষমতায় যেতে পারবো না। তাই তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটাকে একতরফাভাবে বাদ দিয়েছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমনকি আওয়ামী লীগও ১৯৯৬ সালে এর পক্ষে ছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরাজীবন মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। আজ তিনি গৃহবন্দী। এই মহান নেত্রী বাংলাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে অবদান রেখেছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, “একসময় বাংলাদেশে, বিশেষ করে এদেশের গ্রামের সংস্কৃতি ছিল আমরা মেয়েদের লেখাপড়া করাতে চাইতাম না। কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়া হতো। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেটার বিরুদ্ধে আইন করেছেন। তিনি সবচেয়ে বড় যে কাজটি করেছিলেন সেটি হলো, দশম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের বিনামূল্যে লোখাপড়ার ব্যবস্থা করা। তাদের জন্য বেগম খালেদা জিয়া বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেছিলেন।”
মহিলা দলের সভাপতি আব্দুল আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।