Lead Newsজাতীয়সরকার

৫০ লাখ পরিবার পেলো প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার

করোনাভাইরাস মহামারির জন্য ঈদের আগেই নিম্ন আয়ের (হতদ‌রিদ্র ও কর্মহীন) অসহায় মানুষের আর্থিক সহায়তা দিলো সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হিসাবে সরাসরি নগদ অর্থ প্রেরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এছাড়া একই সময় তিনি স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ সালের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণের কার্যক্রমও উদ্বোধন করেন।

বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দোয়া করবেন, এভাবে যেন দিতে পারি। এটাতো কিছুই না‌।

প্রধানমন্ত্রী জানান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভাসমান মানুষ এবং নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে ঘাট শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, নির্মাণ শ্রমিক, নরসুন্দর, চায়ের দোকানদার, কুলি মজুরসহ দিন আনে দিন খাওয়া যেসব মানুষের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে তাদের জন্য কিছু নগদ অর্থ সহায়তার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি, সুবিধাপ্রাপ্তদের জন্য এটি বিশেষ কিছু নয়। তবু এখন রমজান মাস চলছে। সামনে ঈদ। এই সময় আপনাদেরকে যে কিছু দিলাম, এটিই সান্ত্বনা। আপনারা ধৈর্য হারাবেন না। বর্তমান চলমান পরিস্থিতি থেকে আমরা মুক্তি পাব ইনশাআল্লাহ।

এর মধ্য দিয়ে করোনা সংকটে কাজ হারানো নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষের কাছে নগদ অর্থ পৌছে যাবে। এর আগে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জেলাগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সকালে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন ঈদের আগে কর্মহীন মানুষের কাছে নগদ অর্থ পৌঁছে দেওয়া হবে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পাচ্ছেন ৫০ লাখ পরিবার। প্রতি পরিবারে ৪ জন করে সদস্য ধরে এই নগদ সহায়তায় উপকারভোগী হবে প্রায় ২ কোটি মানুষ। এ জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।

এই সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আসছে রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের নানা পেশার মানুষ। যারা লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। প্রতি পরিবারকে ২৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে।

ইতিমধ্যে সহায়তা প্রাপ্য নিম্ন আয়ের মানুষের তালিকা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, গ্রামের মেম্বার, শিক্ষক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এই তালিকা তৈরি করেছেন।

একই সময়ে স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ সালের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি প্রদানের কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড মাধ্যমে কিছু শিক্ষা সহায়তা দিয়ে থাকি। উচ্চ শিক্ষায় মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী সেই সহায়তা দেওয়া হয়। এখানে ট্রাস্টে স্থায়ী তহবিল গঠন করা আছে সেই তহবিলে বিত্তবানরা বা অনেক প্রতিষ্ঠান অনুদান দেন। সেই ট্রাস্টের মাধ্যমে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতে ২ লাখ ৯ হাজার ৬৭৪জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে উপবৃত্তি বাবদ ১০২ কোটি ৭৪ লাখ ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং টিউশন ফি বাবদ ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা বিতরণ করা হলো।

আমাদের ছেলে মেয়েরা যারা খুব মেধাবী। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে এটা হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ের জাতি। আমাদের শুধু সেটা মনে রাখতে হবে যে আমরা বিজয়ের জাতি। যতই ঝড় ঝাপটা আসুক যত আঘাত আসুক, যাই আসুক না কেন আমাদের সব সময় বিজয়ী জাতি হিসেবে এই কথা চিন্তা করে মাথা উঁচু করে চলতে হবে।

তালিকাভুক্তদের মধ্যে নগদ, বিকাশ, রকেট, এবং শিউরক্যাশ এর মাধ্যমে সরাসরি এই টাকা চলে যাবে। ফলে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না। টাকা পাঠানোর খরচ সরকার বহন করবে। এই ৫০ লাখ পরিবারের বাইরে আরো ৫০ লাখ পরিবারের প্রায় ২ কোটি সদস্য আগে থেকেই ভিজিএফ কার্ডের আওতায় রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা,বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, শিক্ষা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + nine =

Back to top button