অনেক নাটকীয়তার পর চলতি মৌসুমের শুরুতেই স্বপ্নের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখান ফ্রেঞ্চ সুপারস্টার কিলিয়ান এম্বাপ্পে। কিন্তু নতুন দেশ, নতুন ক্লাব ও নতুন পরিবেশে এসে কোনভাবেই নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না। আর তাই চারিদিক থেকে নানামুখী সমালোচনায় বিদ্ধ হতে থাকেন, সেইসাথে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকেন মোক্ষম সময়ের জন্য। অবশেষে সেই সময় বুঝি এলো, একের পর এক গোল করে চলেছেন রিয়ালের হয়ে। গত কয়েক ম্যাচের ধারাবাহিকতায় উজ্জ্বল এম্বাপ্পে এবার স্প্যানিশ জায়ান্টদের হয়ে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করে ফেলেছেন।
গেলো রাতে লা লিগার ম্যাচে লাল কার্ডের খাঁড়ায় পড়ে অনুপস্থিত ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার ভিনিসিউস জুনিয়রের অভাব বুঝতেই দিলেন না কিলিয়ান এম্বাপ্পে। চমৎকার দুই ফিনিশিংয়েরর পর সফল স্পট কিকে পূর্ণ করলেন হ্যাটট্রিক। তার স্বভাবজাত নৈপুণ্যে লা লিগার ঐ ম্যাচে রেয়াল ভায়াদলিদকে অনায়াসে হারাল রিয়াল মাদ্রিদ। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, প্রতিপক্ষের মাঠে শনিবার রাতে ৩-০ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
লা লিগার চ্যাম্পিয়নরা বল দখল, গোলের জন্য শট ও লক্ষ্যে রাখা- তিনটি সূচকেই ঢের এগিয়ে ছিল। তবে সীমিত সুযোগেও অন্তত তিনবার গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার কঠিন পরীক্ষা নেয় ভায়াদলিদ, কিন্তু ঐ তিনবারই দারুণ আস্থায় জাল অক্ষত রাখেন অভিজ্ঞ এ বেলজিয়ান গোলরক্ষক।
অথচ ঘরের মাঠে দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত ভায়াদলিদ। সেলিম আমাল্লাহর কর্নারে ছয় গজ দূর থেকে হেড করেন দাভিদ তরেস। ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন কোর্তোয়া। ২৪তম মিনিটে ফের ভায়াদলিদকে হতাশ করেন কোর্তোয়া। মারিও মার্তিনের কাছ থেকে বুলেট গতির শট নেন মামদু সিলার। ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।
ছয় মিনিট পরে এগিয়ে যায় স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। জুড বেলিংহ্যামের কাছ থেকে বল পেয়ে জোরাল আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন এমবাপে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি ছিলো রিয়ালের হয়ে ৩২ ম্যাচে ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ডের ২০তম গোল।
এগিয়ে যাওয়ার পর ভায়াদলিদকে বেশ চেপে ধরে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে বিরতির আগে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি সফরকারিরা। ৫২তম মিনিটে ইভান সানচেসের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন কোর্তোয়া। কিন্তু পাঁচ মিনিট পর আর শেষ রক্ষা হয়নি- ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপে। প্রতি-আক্রমণে দারুণ গতিতে ডি-বক্সে ঢুকে যাওয়া রদ্রিগো নিজেও শট নিতে পারতেন। সেটা না করে এ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বাঁয়ে খুঁজে নেন এম্বাপ্পেকে, আড়াআড়ি শটে বাকিটা সারেন তিনি।
রিয়ালের হয়ে সবশেষ ৫ ম্যাচে এটি ছিলো এম্বাপ্পের সপ্তম গোল। ৬৭তম মিনিটে হ্যাটট্রিকের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এ ফ্রেঞ্চ সুপারস্টার। বেলিংহ্যামের সঙ্গে ‘ওয়ান-টু’ খেলে ভেতরে ঢুকে যান তিনি। কিন্তু দুরূহ কোণ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। তবে যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে ঠিকই রিয়ালের হয়ে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এম্বাপ্পে।
বেলিংহ্যামকে ভায়াদলিদের মার্তিন ফাউল করায় ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। একই সঙ্গে রিয়াল থেকেই ধারে খেলা এ মিডফেল্ডারকে দেখান দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। বাকি কয়েক মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলে ভায়াদলিদ।
লা লিগায় মোট ২১ ম্যাচে ১৫ জয় ও ৪ ড্রয়ে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ, সমান ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আতলেতিকো মাদ্রিদ। আর ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে আছে বার্সেলোনা ও আথলেতিক বিলবাও। তবে গোল পার্থক্যে এগিয়ে তিনে হান্সি ফ্লিকের বার্সা।