গত ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের আলোচিত সংগঠন হেফাজত ইসলামের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আগে থেকে চলতে থাকা আল্লামা শফীপন্থী ও বাবুনগরীপন্থীদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বটা এরপরই প্রকাশ্যে চলে আসে। এমনকি পাল্টা কমিটির হুঁশিয়ারিও এসেছে পদবঞ্চিত গ্রুপের পক্ষ থেকে। তবে দ্বন্দ্ব কিংবা মান-অভিমান ভুলে এবার এক হতে যাচ্ছে কওমি অঙ্গনের প্রভাবশালী এই সংগঠনটির নেতারা।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর দুই দলে ভাগ হয়ে পড়া হেফাজতে ইসলামের এক ভাগে রয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে সিংহভাগ নেতারা। অন্যভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শফীর ছেলে আনাস মাদানী। ১৫ নভেম্বরের সম্মেলনে বাবুনগরীকে আমির এবং কাসেমীকে মহাসচিব করে যে কমিটি ঘোষিত হয়েছে তা প্রত্যাখান করেছিল আনাসপন্থীরা।
গত কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে কঠোর অবস্থানে ছিলো দুই পক্ষই। এবার সুর নরম করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আভাস দিয়েছেন তারা। আনাসপন্থীরা বলছেন- পাল্টা কমিটি নয়, ঘোষিত কমিটি সংস্কার করে তাদেরকে স্থান দিতে হবে। অন্যদিকে নতুন কমিটি থেকে বলা হচ্ছে, আমরা কাউকে বহিস্কার করিনি, সতর্ক করা হয়েছে মাত্র। তাছাড়া আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
পদবঞ্চিতদের অন্যতম নেতা মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী বলেন, আমরা হেফাজতকে ভাঙতে চাই না। কারণ এটা দেশের আলেম ও মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম। আমরা চাই, কমিটি সংস্কার করা হোক। অন্যদিকে, সদ্যঘোষিত কমিটির সহ-সম্পাদক মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন, হেফাজত কাউকে বহিস্কার করেনি। তবে অনেককে হলুদ কার্ড দেখাতে বাধ্য হয়েছে।
মূলত শাপলা চত্বরের ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে আল্লামা শফীর সঙ্গে বাবুনগরীর মতবিরোধ তৈরি হয়। তৎকালীন আমির আল্লামা শফী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের দিকে যেভাবে ঝুঁকে পড়েছেন, মহাসচিব বাবুনগরী সেভাবে চাননি। বিষয়টি ইতিবাচকভাবে না নেয়ায় হেফাজতের বড় অংশ বর্তমানে বাবুনগরীর অবস্থানকে সমর্থন দেন।