আবারও আমরণ অনশন শুরু করেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
শিক্ষক ফারহানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) সিন্ডিকেট বৈঠক মুলতবি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে রবির ঢাকা অফিসে এ বৈঠক শুরু হয়। টানা ৩ ঘণ্টা বৈঠক চলার পর কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ বৈঠক শেষ হয়।
এতে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন রবির শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার রাত থেকেই আমরণ অনশন ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন তারা।
বৈঠক শেষে রবিব দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী মোবাইল ফোনে শাহজাদপুরের কান্দাপাড়ার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের বিষয়টি অবহিত করেন। এর পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতারা জরুরি বৈঠক করে আবারও আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেন।
রাত ৮টা থেকেই তারা আমরণ অনশন ও লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। তারা দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে শাহজাদপুরের কান্দাপাড়ার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন ও বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করেন। এ ঘটনায় আবারও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে রবির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এরপর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার বিকালে ঢাকা অফিসে সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবু জাফর ও শামীম হোসেন বলেন, সিন্ডিকেট বৈঠকে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বরখাস্তের সিদ্ধান্ত আশা করেছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমাদের পরীক্ষার হলে ফিরে যেতে বলেন। আমরা তাদের এ আদেশ গ্রহণ না করে শিক্ষিকা ফারহানা স্থায়ী বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাব। এ বিষয়ে জানতে রবির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীর মোবাইল ফোনে একাধিক কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ওই বিভাগের প্রথম বর্ষের ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ অপমান সইতে না পেরে এক ছাত্র ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও শিক্ষিকা ফারহানার অপসারণ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করে ঘটনার তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।