সিডর, আইলা ও বুলবুল—কারো কাছেই হার মানেনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। অপরাজেয় এই বনের কাছে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় মাথা নত করেছে। এবারও সুন্দরবন বুক চিতিয়ে লড়ে গেল প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের বিরুদ্ধে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপে প্রথম আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এর পর বুধবার রাত নয়টায় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি ঘণ্টায় ১৫১ কিলোমিটার গতিবেগে সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত করে। এ সময় ১২ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস ছিল। সুন্দরবন দিয়ে অতিক্রম করার সময় গাছপালায় বাধা পেয়ে আম্পানের তাণ্ডব কিছুটা কম হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ, পশ্চিম বন বিভাগ এবং প্রধান বন সংরক্ষকের সঙ্গে কথা হয় গত রাতেই। তারা সবাই বলেছেন, রাতে বিভিন্ন ফাঁড়ি থেকে তাদের প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টির খবর দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জোয়ারের পানি সুন্দরবনের অনেক ভেতরে ঢুকেছে বলেও জানা গেছে। এ কারণে সুন্দরবনের ভেতর বন্য প্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন যেকোনো দুর্যোগেই মায়ের মতো বুক চিতিয়ে উপকূলবাসীকে রক্ষা করে। এবারও তাই হয়েছে। তবে বেশি আতঙ্কের বিষয় হলো, জোয়ারের পানি বেশি ভেতরে ঢুকছে। যার ফলে হরিণ ও বুনো শূকরের ক্ষতি বেশি হবে।
এর আগে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলা একইভাবে সুন্দরবনে বাধা পেয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ২০১৯ সালের ১০ নভেম্বর সুন্দরবনের বাধা পায়।
পরিবেশবিদরা বলছেন, সুন্দরবন এমন একটি প্রাকৃতিক সম্পদ যেটা কোনো কারণে ধ্বংস হলে সেটি আর আমরা তৈরি করতে পারব না। এই বন বাংলাদেশকে মায়ের মতো আগলে রাখে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৈব-দুর্বিপাক থেকে আমাদের রক্ষা করে।