ইভ্যালীর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সরকারকেই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি
প্রলোভন দেখিয়ে ইভ্যালিসহ অনলাইনভিত্তিক বাণিজ্যিক (ই-কমার্স) প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া কয়েক হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে দিতে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে-এমন মন্তব্য বিশেজ্ঞদের।
তাদের মতে, “এ টাকা উদ্ধার করতে হবে আইনি প্রক্রিয়ায়। পাশাপাশি এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা জরুরি। লোভনীয় অফারের ক্ষেত্রে গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের হতে হবে আরও সতর্ক। ”
গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মো. রাসেল ও তার স্ত্রী একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতার করে র্যাব। তাদের গ্রেফতারের পর ইভ্যালিতে থাকা টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন গ্রাহকরা।
তাদের আশঙ্কা-ডেসটিনি, ই-অরেঞ্জ, এহসান গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কয়েক হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেলেও তা গ্রাহকরা ফেরত পাননি। এতে অনেক গ্রাহক সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ইভ্যালির জালিয়াতিতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, “ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা অতীতে আরও কয়েকটি কোম্পানি ঘটিয়েছে। ওই অভিজ্ঞতা নিয়ে ইভ্যালির টাকা কিভাবে উদ্ধার করা যায় সেই পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে।
ইভ্যালিসহ এ ধরনের যেসব প্রতিষ্ঠান বাজারে আছে, তাদের ওপর সরকারের মনিটরিং থাকা দরকার। কোম্পানি প্রতিষ্ঠার শুরুতে তারা কী ধরনের কাজ করছে, কোনো ধরনের অনিয়ম করছে কিনা- মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সরকারের তা বের করা দরকার। ”
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, “এখানে দেখতে হবে তারা কি কি করেছে? তারা অনেক বেশি প্রলোভন দেখিয়েছে। বিজ্ঞাপন দিয়েছে, ছাড়ের অফার দিয়েছে। এভাবেই গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেছে। কিন্তু এখানে গ্রাহকদেরও একটা দায়িত্ব থাকতে হয়।
জানা গেছে, ইভ্যালির কাছে গ্রাহকের বিপুল পরিমাণ টাকা আটকে আছে। এ টাকার পরিমাণ নিয়েও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্য বেরিয়েছে। বৃহস্পতিবার র্যাব জানায়, ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও এমডি তাদের জানিয়েছেন- তাদের কাছে গ্রাহকদের হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। অপরদিকে, ব্যাংকে তাদের মাত্র ৩০ লাখ টাকা রয়েছে। ১৮ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির কাছে দেনা ৪০৩ কোটি টাকা ও চলতি সম্পদ ৬৫ কোটি টাকা। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ইভ্যালি জানায়- প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যবসায়ীদের (মার্চেন্ট) পাওনা প্রায় ২০৬ কোটি টাকা।