Lead Newsজাতীয়

ঈদের আগে ৫ ও পরে ৩ দিন সাধারণ ট্রাক-ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ

ঈদের আগে পাঁচ দিন এবং পরে তিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ব্যতীত সাধারণ ট্রাক  ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ থাকবে।

সেই সাথে বর্তমানে সূর্যাস্তের পর সব প্রকার মালবাহী জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। আর ঈদের আগে পাঁচ দিন এবং পরে তিন দিন পর্যন্ত দিনের বেলায়ও সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে।

বুধবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে লঞ্চ, ফেরি ও অন্যান্য জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। তিনি ঢাকায় অবস্থানরত কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের সাথে সরাসরি এবং ঢাকার বাইরের কর্মকর্তাদের সাথে জুম অ্যাপের মাধ্যমে আলোচনা করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে কম্প্রোমাইজ নয়। প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) জনিত রোগ বিস্তার রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে যাত্রীসহ নৌযান চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’

‘লঞ্চ ও ফেরিতে যাত্রী পারাপার করে আসছি। কোভিড-১৯ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় লঞ্চে কোনো যাত্রীর করোনায় আক্রান্তের সংবাদ পাইনি। আল্লাহর রহমতে করোনায় মৃত্যুহার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক কম,’ যোগ করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী সময়সূচি অনুযায়ী লঞ্চ চলাচল করতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়েছিল। অতীতে বিভিন্ন সামরিক সরকার বিশেষ করে জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সরকার নৌপথের উন্নয়নে কোনো কাজ করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিগত ১১ বছরে নৌপরিবহন খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নদীর প্রবাহ ঠিক রাখা, নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নকশা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরাপদ নৌপথ তৈরির ক্ষেত্রে আমরা অঙ্গিকারাবদ্ধ। শেখ হাসিনার মতো সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্ব পেয়েছি। তার সাহসী নেতৃত্বকে কাজে লাগিয়ে দেশকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যেতে পারব।’

সভায় জানানো হয় যে লঞ্চে যাত্রী ওঠার সময় লঞ্চের চালক, মাস্টার ও অন্য কর্মচারীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় এবং নদীর মাঝপথে নৌকাযোগে যাত্রী উঠালে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো ক্রমেই লঞ্চে যাত্রী ও মালামাল ওভারলোড করা যাবে না। প্রত্যেক লঞ্চের সিড়ির দুই পাশে প্রশস্ত রেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সদরঘাট ও নদীর মাঝপথ থেকে নৌকা দিয়ে যাত্রী লঞ্চে বা নৌযানে যেন উঠতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে নিয়োজিত করতে হবে। কেবিনের যাত্রীদের ছবি, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংরক্ষণ করতে হবে।

রাতের বেলা স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে এবং এগুলো চলাচলের সময় যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরিধান নিশ্চিত করতে হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এতে আরও বলা হয়, ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রণের জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে নৌ দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য পদ্মা নদীতে ঘূর্ণাবর্ত এলাকায় মাইর্কিং করতে হবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান খাজা মিয়া, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, নৌপুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার চেয়ারম্যান মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, লঞ্চ মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু, শহীদুল ইসলাম ভূইয়া ও বদিউজ্জামান বাদল সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 1 =

Back to top button